পুলিশ (প্রতীকী ছবি)
পুলিশ (প্রতীকী ছবি)

‘ডাকাত সাজিয়ে’ কিশোর মিলন হত্যা মামলায় এসআই কারাগারে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ‘ডাকাত সাজিয়ে’ কিশোর শামছুদ্দিন মিলনকে (১৬) পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম উদ্দিন শেখকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) নোয়াখালীর ৪ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নবনীতা গুহ এ আদেশ দেন।

আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হক বলেন, মিলন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় এসআই আকরাম উদ্দিন আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, একই আদালতে গতকাল মঙ্গলবার ১০ জন আসামি আত্মসমর্পণ করলে তাদেরও জেলহাজতে পাঠানো হয়। আসামিরা হলেন আজিজুল হক, আহছান উল্যা, আকবর হোসেন ওরফে সুমন, দেলোয়ার হোসেন ওরফে স্বপন, সালাহ উদ্দিন ওরফে মিলন, ওমর ফারুখ, মো. সবুজ, আবুল খায়ের ওরফে লিটু, নুর উদ্দিন ওরফে বাবু ও মো. সেলিম।

সূত্র জানায়, এ মামলায় আটজন আসামি ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে আছেন। আর আজ ও গতকাল আত্মসমর্পণ করলেন ১১ আসামি। বাকি নয়জন আসামি পলাতক আছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর কাঁকড়া এলাকায় ডাকাত সাজিয়ে কিশোর শামছুদ্দিন মিলনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ গাড়িতে করে এনে জনতার হাতে এই কিশোরকে ছেড়ে দেয়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতেই মিলনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়াসহ পুরো ঘটনাটির ভিডিওচিত্র সে সময় ভাইরাল হয়।

এ ঘটনার পর ওই বছরের ৩ আগস্ট মিলনের মা কোহিনুর বেগম আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। মামলায় তিনি পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আদালত থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় যাওয়ার পর প্রথমে থানা-পুলিশ, পরে গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

এ নিয়ে ওই বছরের ২৭ জুলাই ‘বিচার মাটিচাপা দিল পুলিশ’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। মামলার বাদী মিলনের মা কোহিনুর বেগমও আদালতে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। পরে ৫ নভেম্বর ২ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারহানা ভূঁইয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন।

সিআইডি দীর্ঘ তিন বছর ৪ মাসের তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলেও পুলিশকে বাদ দিয়ে গত ৯ মার্চ আদালতে ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্রের সাক্ষীর তালিকায় থাকা পুলিশের এসআই আকরাম উদ্দিন শেখকে আসামি করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।