বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

দণ্ডিত আসামির জামিন বিষয়ে নিম্ন আদালতের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা

নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারা যথাযথভাবে পালনের নির্দেশনা দিয়ে অধস্তন আদালতগুলোর প্রতি সার্কুলার জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ওয়েবসাইটে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারায় নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপিলের শর্তে জামিনে মুক্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিধানাবলী উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে বিচারিক আদালত কর্তৃক তা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না মর্মে সুপ্রিম কোর্টের গোচরীভূত হয়েছে। এ ধরণের কার্যক্রমে বিচারিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং জনসাধারণের নিকট বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

একইসঙ্গে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২৪৮৭/২০১৯ নম্বর ক্রিমিনাল রিভিশন মামলায় চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারা প্রতিপালনে নির্দেশ দিয়েছেন।

হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, আপিলে এক বছরের বেশি সাজা বহাল রয়েছে—এমন কোনো আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) অনুযায়ী কোনো দায়রা জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন দেওয়ার এখতিয়ার নেই।

হাইকোর্টের রায়ে আরও বলা হয়, এক বছরের কম সাজা হয়েছে—এমন ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ দিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আসামিকে জামিন দিতে পারেন দায়রা আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। তবে এক বছরের বেশি সাজা হয়েছে এবং আপিল আদালতে সেই সাজা বহাল রয়েছে—এমন ক্ষেত্রে কোনোভাবেই জামিন দিতে পারেন না দায়রা জজ আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

রায়ে বলা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন আদালতে সাজা বহাল রয়েছে—এমন যেকোনো আসামিকেও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন দিতে পারেন না।

এমতাবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২ক) ধারা প্রতিপালনের জন্য হাইকোর্টের এই রায়ের আলোকে সব অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: আইন লঙ্ঘন করে জামিন দেয়ায় হাইকোর্টের ক্ষোভ