ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা অনুসন্ধানে বিচারিক তদন্তের নির্দেশ

চলতি বছর ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জ্বর নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার জেলা জজ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগরীর দুই সিটির মশা নিধনে গ্রহণ করা পদক্ষেপের বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।

তদন্ত কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক, আইসিডিআরবির একজন কর্মকর্তা, প্ল্যান প্রোটেকশনের একজন কর্মকর্তা এবং পাবলিক হেলথ বিভাগের একজন কর্মকর্তার মতামত নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, কমিটি চাইলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যেকোনও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির মতামত নিতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির পক্ষে অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার তৌফিক এনাম টিপু। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাইনুল হাসান।

এদিকে, মামলার শুনানিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান আদালতকে জানান, এবছর ডেঙ্গুতে গত ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১১২ জন মারা গেছেন।

এর আগে গত ৬ নভেম্বর চলতি বছরে সারাদেশে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এডিস মশা নির্মূলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৪ জুলাই আদালত তার আদেশে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

একইসঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নির্মূলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।

পরে ওই বিষয়ে দুই সিটির পক্ষ থেকে গত ২২ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু সে প্রতিবেদনে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করলে গত ২৫ জুলাই তারা স্বশরীরে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ আগস্ট ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংসে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপকভাবে ওষুধ ছিটানো ও অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।