বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

জঙ্গি অর্থায়ন: দুই আইনজীবীর আপিল ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ

জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডকে নাশকতার জন্য অর্থায়নের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুই মামলার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে আপিল বিভাগে। একইসঙ্গে চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

দুই আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। দুই আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন, সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম।

আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন বলে জানিয়ে ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, হাইকোর্ট বিভাগের স্থগিতাদেশের ওপর আপিল বিভাগ কোনো ইন্টারফেয়ার করেননি। চার সপ্তাহের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।

২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলায় মাদরাসাতুল আবু বকর নামে একটি মাদরাসায় ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব। ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালী উপজেলার লটমণি পাহাড়ে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব-৭ এর কর্মকর্তারা জানান, হাটহাজারী ও বাঁশখালী থেকে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা নতুন জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডের সদস্য। শহীদ হামজা ব্রিগেডের তিনটি সামরিক উইং আছে। এগুলো হলো- গ্রিন, ব্লু এবং হোয়াইট। প্রত্যেক উইংয়ে সাতজন করে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য আছেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম নগরের ফয়’স লেকে একটি রেস্টুরেন্টে সভা করে এই জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটান সংগঠকরা।

পরে ১৮ আগস্ট হামজা ব্রিগেডকে অর্থায়নের অভিযোগে ঢাকা থেকে আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা (৩৯), অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন (৩০) ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।

ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বিএনপি নেতা সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে।

পরে চলতি বছরের ২০ আগস্ট হাটহাজারীর মামলায় ৩৩ জন আসামি ও বাঁশখালীর মামলায় ২৮ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে আদেশ দেন চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালীম।

তবে পলাতক থাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

এরপর অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপন। ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।