বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ

আবরার হত্যা মামলার অভি‌যোগ গঠ‌ন ৩০ জানুয়া‌রি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভি‌যোগ গঠ‌নের জন্য ৩০ জানুয়া‌রি দিন ধার্য ক‌রে‌ছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়া‌রি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কা‌য়েশ চার্জ‌শিট গ্রহণ ও মামলা আম‌লে নি‌য়ে অভি‌যোগ গঠ‌নের জন্য এই দিন ধার্য ক‌রেন।

ওই আদাল‌তে রাষ্ট্রপ‌ক্ষের আইনজীবী অ‌তি‌রিক্ত পাব‌লিক প্রসি‌কিউটর তাপস কুমার পাল এই তথ্য জানান।

এর আ‌গে গত ১২ জানুয়া‌রি ঢাকার অ‌তি‌রিক্ত মেট্রোপ‌লিটন ম্যা‌জি‌স্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম মামলা‌টি বিচা‌রের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদাল‌তে বদ‌লির আ‌দেশ দেন। ওই‌দিনই প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠা‌নিকতা শে‌ষে বদ‌লি আদাল‌তে মামলা‌টি স্থানান্তর হয়।

গত ১৫ জানুয়া‌রি মামলা আম‌লে নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য ক‌রে‌ছিলেন মহানগর দায়রা জজ।

গত বছর ১৩ ন‌ভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল ক‌রেন গো‌য়েন্দা পু‌লিশের (ডি‌বি) লালবাগ জোনাল টি‌মের প‌রিদর্শক মো. ওয়া‌হিদুজ্জামান।

প‌রে ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। প‌রোয়ানা অনুযায়ী গ্রেফতার কর‌তে না পারায় গত ৩ ডি‌সেম্বর তা‌দের সম্পদ ক্রো‌কের নি‌র্দেশ দেওয়া হয়। ৫ জানুয়া‌রির ম‌ধ্যে ক্রোকি প‌রোয়ানা তা‌মি‌লের নি‌র্দেশ দেওয়া হ‌য়ে‌ছিল।

এরপর ৫ জানুয়া‌রি পলাতক আসা‌মি‌দের হা‌জি‌রে বিজ্ঞ‌প্তি প্রকাশের আ‌দেশ দেওয়া হয়। বিজ্ঞ‌প্তি প্রকা‌শের বিষ‌য়ে প্র‌তি‌বেদন দা‌খি‌লের এক‌দিন আ‌গে আ‌গের দিন মোর্শেদ অমত্য ইসলাম না‌মে পলাতক এক আসা‌মি আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন আ‌বেদন ক‌রেন। আদালত জা‌মিন আ‌বেদন নামঞ্জুর ক‌রে তা‌কে কারাগা‌রে পাঠান।

এখন পলাতক থাকলেন আর তিন আসা‌মি। তারা হ‌লেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর ম‌ধ্যে মোস্তবা রা‌ফিদের নাম এজাহা‌রে ছিল না।

প‌ত্রিকায় বিজ্ঞ‌প্তি প্রকা‌শের পরও পলাতক বা‌কি আসা‌মিরা হা‌জির না হ‌লে তা‌দের অনুপ‌স্থি‌তি‌তেই বিচার শুরু হবে ব‌লে জানান রাষ্ট্রপ‌ক্ষের আইনজীবী।

মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভুত ৬ জন। গ্রেফতারদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তদন্ত চলাকালে মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হ‌লেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

গ্রেফতারদের ম‌ধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।

এর ম‌ধ্যে আটজন আদাল‌তে স্বীকা‌রো‌ক্তিমূলক জবানব‌ন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ।

এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।