হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

বিচারাধীন ফৌজদারি মামলা আপস করার ক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের নেই: হাইকোর্ট

ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকায় আপস করার এখতিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের (মেম্বারদের) নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। সাত বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের মতো ফৌজদারি অপরাধ সালিশের মাধ্যমে আপস করার ঘটনায় জড়িত সালিশকারী ভোলার চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হোসেন মিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

বিচারাধীন মামলাটি সালিশের মাধ্যমে আপস করায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ভোলা জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

চেয়ারম্যান ছাড়া বাকিরা হলেন- হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের সদস্য মো. মনজল, আমজাদ, সাবেক সদস্য মহিউদ্দিন, হাজারিগঞ্জ যুবলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন হাওলাদার ও মো. আক্তার মিয়া।

সালিশের আপসনামা সংযুক্ত করে আসামি ফজলু দফাদার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। ওই জামিন শুনানির সময় ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত সব ধরনের মামলা বিচারাধীন থাকায় আপস করার ক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের নেই বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

এ সময় আদালত বলেছেন, একটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকায় আপস করার এখতিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের (মেম্বারদের) নেই। আপসনামার বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ থেকে হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত এমন মন্তব্যসহ আদেশ দেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

ঘটনার বিবরণে আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ফজলু দফাদার (৭২) সাত বছরের শিশু ধর্ষণের দায়ে কারাগারে আছেন। গত ১১ জানুয়ারি আসামি ফজলু দফাদার কারাগারে অসুস্থ উল্লেখ করে জিন্নাগড় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এ মামলার বাদী ও বিবাদীপক্ষ আপস করে।

এতে মামলার বাদী আলী আকবর ছাড়াও জিন্নাগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হোসেন মিয়া এবং তিন ইউপি সদস্যসহ ছয়জন উপস্থিত ছিলেন।

আপসনামায় তারা উল্লেখ করেন, আসামির বিরুদ্ধে বাদীপক্ষের কোনো অভিযোগ না থাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু মামলা নং ৪৬০/১৯ থেকে জামিন পেতে কোনো আপত্তি নেই। এই আপসনামা সংযুক্ত করে আসামি ফজলু দফাদার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।