অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক
অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক

নাবালক সন্তান উদ্ধার কিংবা অভিভাবকত্ব পেতে কোথায় যাবেন?

সিরাজ প্রামাণিক:

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া বা তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছেদের কারণে নাবালক সন্তান তাদের কোনো একজনের তত্ত্বাবধানে থাকলে, ওই শিশুকে অপরজনের তত্ত্বাবধানে নেওয়ার বা কথিত উদ্ধারের দাবিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারার বিধান মতে পিটিশন ফাইল করা যায়। ওই পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে নাবালক-নাবালিকার পিতা বা ক্ষেত্রমতো মায়ের তত্ত্বাবধান থেকে নাবালক-নাবালিকাকে উদ্ধারের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে পারেন এবং ক্ষেত্রমতো নাবালক-নাবালিকাকে দরখাস্তকারী মা বা ক্ষেত্রমতো পিতার তত্ত্বাবধানে অর্পণ করার আদেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু এর আইনগত ভিত্তি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অবৈধ আদেশ অনেক সময় আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে।

এই ধারাটি ইমার্জেন্সির বিধান রেখেছে; কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, বিচারিক মন প্রয়োগ না করেই শুধু দরখাস্তের ভিত্তিতে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করা যাবে। কাউকে উদ্ধারের জন্য ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারার অধীনে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হলে প্রথমেই দেখতে হবে ওই ব্যক্তি অন্যায় আটক রয়েছেন কি-না। ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন প্রতিপক্ষের অধীনে শিশুর তত্ত্বাবধান থাকাটা অবৈধ হয়। যদি এমন হয় যে, ওই পরিস্থিতিতে শিশুটি প্রতিপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকাটাই অপরাধ, তখনই কেবল ১০০ ধারা আকৃষ্ট হবে। শিশু যদি তার বাবা-মা-দাদা-দাদির তত্ত্বাবধানে থাকে, সেটাকে কোনোভাবেই অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে ১০০ ধারা প্রয়োগ করা যায় না। স্বামীর ঘর ছাড়া স্ত্রী অন্যত্র অবস্থান করলে বা মায়ের সঙ্গে শিশু না থেকে পিতার সঙ্গে অবস্থান করার কারণেই আইনি কোনো অনুমান সৃষ্টি হয় না যে, ওই স্ত্রী বা শিশু অন্যায় আটক রয়েছে।

২ বি সি আর, পৃষ্ঠা নং ২৩৯ এর একটি সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, বালিকাটি নাবালিকা কিন্তু সে তার পিতার হেফাজতে যেতে চায় না। সে নাবালিকা হওয়ায় তার কল্যাণ সম্পর্কে সে সামান্যই বোঝে। সুতরাং তার কল্যাণের জন্য তাকে তার পিতার হেফাজতে দেয়া উচিৎ। তবে কারও হেফাজতে দেয়ার সময় নাবালিকার কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

১৫ ডি এল আর, পৃষ্ঠা নং ১৪৮ এর একটি সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি স্বাধীন নাগরিক এবং আইনগতভাবে সমর্থ তাকে আটক রাখার এখতিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়নি। তার আটক রাখার আদেশ প্রদান করা যাবে না এবং সে তার ইচ্ছেমতো জায়গায় যেতে পারবে।

Ramesh v. Smt Laxmi Bai 1999, Cri LJ 5023 মামলায় ৯ বছরের ছেলে বাবার সঙ্গে বসবাস করাকালীন সময়ে ওই শিশুর মা আদালতে সার্চ ওয়ারেন্ট মামলা আনয়ন করেন। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, বাবার কাস্টডি হতে মায়ের কাস্টডিতে শিশুকে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সার্চ ওয়ারেন্ট আকৃষ্ট করে না বিধায় ওই মামলা চলতেই পারে না।

Shri Atanu Chakraborty vs The State Of West Bengal & Anr (C.R.R. No. 3870 of 2009) মামলায় ৪ বছরের ছেলে-সন্তানকে বাবার কাছ থেকে উদ্ধারের জন্য মা কর্তৃক সার্চ ওয়ারেন্টের আবেদনের ভিত্তিতে ভারতের বিধাননগরের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে পুলিশকে নির্দেশ দেন ওই নাবালককে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করতে এবং বাবাকেও হাজির থাকতে। সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু সংক্রান্ত ওই আদেশের বিরুদ্ধে নাবালকের বাবা কলকাতা হাইকোর্টে ক্রিমিনাল রিভিশন দায়ের করেন। ক্রিমিনাল রিভিশন মামলার রায়ে বাবার কাস্টডি থেকে নাবালক ছেলেকে উদ্ধারের জন্য দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সার্চ ওয়ারেন্ট সংক্রান্ত আদেশ আইনসম্মত নয় বিধায় বাতিল করা হয়। হাইকোর্ট বলেন, বাবার বিরুদ্ধে অন্যায় আটক অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে, যেখানে Hindu Minority and Guardianship Act, ১৯৫৬-এর ৬ ধারা মতে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে বাবা এবং বাবার পরে মা হলো স্বাভাবিক অভিভাবক। নাবালক ছেলের বয়স ৫ বছর পূর্ণ না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে মায়ের কাস্টডিতে থাকার কথা। আদালতের আদেশ লঙ্ঘন না করে থাকলে, ৫ বছরের কম বয়সী নাবালক ছেলে তার বাবার কাস্টডিতে থাকলে তাকে অন্যায় আটক বলা যাবে না। ওই মামলার ঘটনা ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত বলেন, বাবার সঙ্গে নাবালক ছেলের বসবাস থাকায় সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যুর প্রশ্নই আসে না। পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেন, Guardian & Wards Act, 1890 -এর বিধান মতে নাবালকের কাস্টডির জন্য পক্ষদ্বয় উপযুক্ত দেওয়ানি আদালতে যেতে পারেন। দেওয়ানি আদালতের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মা ৪ বছরের নাবালক ছেলের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকবেন কি-না, এই প্রশ্নের বিষয়ে উচ্চ আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করে বলেন, উপযুক্ত দেওয়ানি আদালতে নাবালকের তত্ত্বাবধানে বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নাবালক তার বাবার কাস্টডিতেই থাকবে।

বাংলাদেশে Family Courts Ordinance, ১৯৮৫-এর ৫ ধারা মতে সন্তানের কাস্টডির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচ্ছত্র এখতিয়ার পারিবারিক আদালতের। আর কাস্টডি প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত কী কী বিবেচনা করবেন, সেগুলো Guardians and Wards Act, ১৮৯০-এর ১৭ ধারায় বিস্তারিত বলা রয়েছে। ওই ধারার বিধান মতে, নাবালক-নাবালিকা যে ধর্মীয় অনুশাসনের অধীন সেই অনুশাসনের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে এবং তার সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে আদালত অভিভাবক নিয়োগ করবেন। নাবালক-নাবালিকার কল্যাণ কী হবে, তা নির্ধারণ হবে নাবালক-নাবালিকার বয়স, লিঙ্গ, ধর্ম, প্রস্তাবিত অভিভাবকের চরিত্র, সামর্থ্য ও নাবালকের সঙ্গে নৈকট্য ও আত্মীয়তার সম্পর্ক, মৃত মা-বাবার কোনো ইচ্ছা (যদি থাকে) এবং প্রস্তাবিত অভিভাবক নাবালক-নাবালিকার সম্পত্তির বিষয়ে সম্পর্কযুক্ত কি-না ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে। এতদবিষয়ে নাবালক-নাবালিকার কোনো বুদ্ধিদীপ্ত মতামত থাকলে আদালত সেই মতামতকে প্রাধান্য দেবেন।

যদি নাবালক-নাবালিকা তার বাবার কাস্টডিতে থাকে যিনি স্বাভাবিক অভিভাবকও বটে, সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ানি আদালত হিসেবে কাজ করতে পারে না এবং নাবালক-নাবালিকার কল্যাণ ও উন্নতির জন্য বাবা নাকি মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকা সমীচীন সেই সিদ্ধান্ত বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেট দিতে পারেন না। ওই কার্যধারা অবলম্বন করার দায়িত্ব ও এখতিয়ার কেবল পারিবারিক আদালতকেই দেওয়া হয়েছে। শিশু যদি তার মা-বাবার মধ্যে কোনো একজনের সঙ্গে থাকে, আর একজন অন্যজনের কাছ থেকে শিশুকে তার তত্ত্বাবধানে নিতে চায়, তাহলে পারিবারিক আদালতে মোকদ্দমা আনয়ন করতে হবে। সিআরপিসির ১০০ ধারার মাধ্যমে Guardians and Wards Act, ১৮৯০-এর বিধানকে অবলম্বন করা যায় না এবং পারিবারিক আদালতের একচ্ছত্র এখতিয়ার বিষয়ে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট বিচার করতে পারেন না। মা-বাবা তার সন্তানের তত্ত্বাবধান নিতে চাইলে তাকে ওই সংক্রান্ত আইনে পারিবারিক আদালতে আসতে হবে; কিন্তু নিশ্চয় ওই বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০০ ধারা কোনো প্রতিকার নয়।

একটি বাস্তব কেইস স্টাডি
নানি রুনা পারভীন তার নাতনী নিশু রহমানকে নিজের কাছে রাখতে এবং পিতা আব্দুর রহমান তাঁর সন্তানের অধিকার চেয়ে ১৯৮৫ সালের পারিবারিক অধ্যাদেশের ১৬-ক ধারায় পারিবারিক আদালতে নিশুর অভিভাবকত্ব চেয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। পারিবারিক আদালত শুনানী শেষে নিশুর নানীর করা মামলাটি খারিজ করে দেন। পিতা আব্দুর রহমানের করা মামলায় আদালত নিশুকে তার বাবার কাছে থাকার আদেশ দেন। শিশু নিশুর নানি এর বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলে জেলা জজ আদালতও নিশুকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ বহাল রাখেন।

মুসলিম আইনে বাবা হলেন সন্তানের স্বাভাবিক আইনগত অভিভাবক। মুসলিম আইনে মা সন্তানের অভিভাবক হতে পারেন না। তবে মা ৭ বছর বয়স পর্যন্ত পুত্র সন্তানকে ও বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত কন্যা সন্তানকে কাছে রাখতে পারেন। এ অধিকারকে বলে ‘হিজানা’ বা জিম্মাদারিত্ব। কিন্তু মা কখনই সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক হতে পারেন না।

এখানে একটি ব্যাপার উল্লেখ্য যে, সন্তানরা অন্য নারী আত্মীয়ের যত্নে বড় হয়ে উঠলেও সন্তানের ওপর বাবার সার্বিক তত্ত্বাবধান থেকেই যায়। মা তালাক হওয়ার কারণে সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন না। কিন্তু মা দ্বিতীয় বিবাহ করলে সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অগ্রাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ওই সন্তানের ওপর মায়ের অভিভাবকত্ব যথার্থ বিবেচিত হয় তা হলে আদালত মাকে ওই সন্তানের অভিভাবক নিয়োগ করতে পারেন। অর্থাৎ দ্বিতীয় বিবাহ করলেই মা সন্তানের ওপর জিম্মাদারিত্ব হারান না। তবে স্বামী-স্ত্রী যখন বসবাস করেন, তখন সন্তান তাদের কাছেই থাকবে। একত্রে বসবাসের সময় স্বামী যেমন কোনোক্রমেই স্ত্রীর কাছ থেকে সন্তানকে সরিয়ে নিতে পারেন না, তেমনি স্ত্রীও নাবালক সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অধিকার সত্ত্বেও স্বামীর অনুমতি ছাড়া সন্তানকে সরিয়ে নিতে পারেন না।

এ ক্ষেত্রে ২২ ডিএলআর, পৃষ্ঠা ৬০৮, ‘ইমামবন্দি বনাম মুসাদ্দির’ মামলায় বলা হয়েছে, ‘মুসলিম আইনে সন্তানের শরীরের ব্যাপারে লিঙ্গভেদে কিছু বয়স পর্যন্ত মা তত্ত্বাবধানের অধিকারীনি। মা স্বাভাবিক অভিভাবক নন। একমাত্র পিতাই বা যদি তিনি মৃত হন তাঁর নির্বাহক আইনগত বা বৈধ অভিভাবক।’ তবে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করলে মা এ অধিকার হারাবেন। [হেদায় ১৩৮, বেইলি ৪৩৫]। সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব সম্পূর্ণ বাবার। মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে ক্ষেত্রে অবশ্য মায়ের দ্বিতীয় স্বামী সন্তানের রক্ত সম্পর্কীয় নিষিদ্ধ স্তরের মধ্যে একজন না হলে মা তার তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা হারাবেন।

তবে আবু বকর সিদ্দিকী বনাম এস এম এ বকর ৩৮ ডি এল আর এর মামলায় এই নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, যদি আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, সন্তান মায়ের হেফাজতে থাকলে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ স্বাভাবিক হবে, সন্তানের কল্যাণ হবে এবং স্বার্থ রক্ষা হবে- সেক্ষেত্রে আদালত মাকে ওই বয়সের পরেও সন্তানের জিম্মাদার নিয়োগ করতে পারেন।

আপিল আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, নাবালিকার হেফাজত পাওয়ার জন্য নানি ও বাবা উভয়ই আবেদন করেছেন। নিম্ন আদালত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন,‘মুসলিম আইন অনুযায়ী পিতা যে কোনো নাবালকের ন্যাচারাল গার্ডিয়ান (স্বাভাবিক অভিভাবক)। যেহেতু নাবালিকার মা দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন, সেহেতু পিতার ওপর অভিভাবকত্বের হেফাজত বর্তাইবে। তাই নাবালিকার নানির আনা আবেদন নাকচ করেন নিম্ন আদালত।’ রায়ে আরও বলা হয়, ‘পিতা-মাতা জীবিত থাকাকালে মুসলিম পারিবারিক আইন ও অভিভাবকত্ব আইনে অন্য কেউ নাবালিকার অধিকার পেতে পারে না। পিতা-মাতার অবর্তমানে নানি, এরপর দাদা-দাদি নাবালকের হেফাজত পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু নাবালিকা নিশুর মা দ্বিতীয় বিবাহ করার কারণে নানির হেফাজতের অধিকার নষ্ট হয়েছে। পিতা দ্বিতীয় বিবাহ করেন নাই। পিতার পিতা-মাতা জীবিত আছে। কাজেই পিতার কাছে নাবালিকার অকল্যাণ হওয়ার কারণ নেই।’

৩০ ডি এল আর, পৃষ্ঠা ২০৮ এর একটি সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, নাবালকের কল্যাণের বিষয়টি হচ্ছে মূল কথা। আদালত নাবালকের কল্যাণ কীভাবে নিহিত আছে, সেটিই বিবেচনা করবেন। কোনো বাবা নিজের অচরণের কারণে সন্তানের তত্ত্বাবধানের অধিকার হারাতে পারেন।

১৭ ডি এল আর, পৃষ্ঠা ১৩৪ এর একটি সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, কোনো বাবা সন্তানের ভরণপোষণ দিতে অপারগ থাকলে সে ক্ষেত্রে বাবাকে মায়ের কাছ থেকে অধিকার সমর্পণ করা ঠিক নয়। আবার মা যদি তাঁর নাবালক সন্তানের তাঁর স্বামীর আর্থিক সাহায্য ছাড়াই নিজ খরচে লালন-পালন করে থাকেন, তবে সে সন্তানকে আদালত বাবার তত্ত্বাবধানে দিতে অস্বীকার করতে পারেন। যদি কোনো নাবালকের কেউ না থাকে, আদালত নিজ বিবেচনায় অভিভাবক নিয়োগ করেন। ১৮৯০ এর আইনের ধারানুযায়ী, নাবালিকা স্ত্রীর হেফাজত বা অভিভাবক তাঁর স্বামী।

সিরাজ প্রামাণিক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা ও সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। ই-মেইল: seraj.pramanik@gmail.com