রমনা পার্ক কেন খুলে দেয়া হচ্ছে না জানতে চান হাইকোর্ট

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ থাকা রাজধানীর রমনা পার্ক জনসাধারণের জন্য কেন উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে না, তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিন ঠিক করেছেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ড. ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্টপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল নুর উস সাদিক।

এর আগে, গত ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ রিটটি করেন।

রিটে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে বন্ধ থাকা রাজধানীর রমনা পার্ক জনসাধারণের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত করে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে, রমনা পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-এই মর্মে রুল জারির আরজি জানান। রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী জানান, ১৬১০ সালে এটি সৃষ্টির পর থেকে কখনো বন্ধ হয়নি। রমনা পার্ক সবসময় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে রমনা পার্ক বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় অফিস-আদালতসহ সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু রমনা পার্ক এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে জনগণের চলাফেরার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। জনগণের চলাফেরার স্বাধীনতার কথা সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। রমনা পার্ক বন্ধ রাখার ফলে জনগণের চলাফেরা করার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। শত শত ডায়াবেটিস রোগী এ পার্কে হাঁটা চলাফেরা করতে না পারায় অনেকে মৃত্যুর মুখে ঝুঁকে পড়ছেন। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জনগণের জন্য পার্কটি খুলে দেয়ার নির্দেশনা চেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রমনা পার্ক খুলে দিতে গণপূর্ত সচিবকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশের জবাব না পেয়ে এই রিট আবেদন করা হয়।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে রাজধানী ঢাকার প্রায় সব পার্ক ও উদ্যান বন্ধ রয়েছে। ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও এখনও এসব বিনোদন কেন্দ্র চালু হয়নি। কবে নাগাদ খোলা হবে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এজন্য এখনও তাদের কাছে কোনও নির্দেশনা আসেনি।

আর এ বিষয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের জারি করা বিধিনিষেধ শেষ হলে পার্কগুলো পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জারি করা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) দিয়ে পরিচালিত হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর প্রায় সবকটি বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, জাতীয় চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলধা গার্ডেন, ডিএনসিসি ওন্ডারল্যান্ড, জাতীয় জাদুঘর, শাহবাগ শিশু পার্কসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রও বন্ধ রয়েছে।

গণপরিবহন ও সরকারি অফিস আদালত পুরোদমে চালু হলেও এখনও এসব বিনোদন কেন্দ্র চালু হয়নি। তবে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এগুলো চালু করা যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার।