আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

ভার্চ্যুয়াল কোর্টে ৫০ হাজারের অধিক মামলা নিষ্পত্তি: আইনমন্ত্রী

বিচার বিভাগে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে শনিবার পর্যন্ত ৫০ হাজারের অধিক মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কারাগারগুলোতে ওভার পপুলেশনের সমস্যা নিরসন করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আট তলা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের অনেক সাফল্য পাওয়া গেছে। ভার্চ্যুয়াল কোর্টকে আরো সাফল্যমণ্ডিত করতে গেলে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্টকে আরো সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য প্রধান বিচারপতি যে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে আইসিটি বিভাগকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, যা এখন পরিকল্পনা কমিশনে আছে। এ প্রকল্প কিছুদিনের মধ্যে একনেক মিটিংয়ে উঠবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩১ লাখ মামলার জট থাকবে না। গত ১২ বছরে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনা যতটা সক্রিয় ছিলেন তার পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে বিচার বিভাগ। এই সহযোগিতা এবং বিচার বিভাগের কাজ যেভাবে চলছে সেভাবে চলতে থাকলে নিশ্চিত বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সফল হবে।

আনিসুল হক বলেন, ৩১ লাখ মামলাজট নিয়ে সরকার অত্যন্ত সজাগ। এ জট নিরসন করা হবে। এ জট নিরসনের জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি আদালত সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিচারকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি কর করা হচ্ছে। তাছাড়া সরকার আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। যে মামলাগুলোর বিচার না হলে আইনের শাসন ব্যাহত হতো সেগুলোর বিচার তার সরকারের মেয়াদে সম্পন্ন করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে সুযোগ সুবিধা দিলে এবং অবকাঠামো দিয়ে সহায়তা করলে বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করতে পারে।

জুডিসিয়াল একাডেমি
বিচার বিভাগের অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করার জন্য মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল একাডেমি স্থাপন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন প্রকল্পটির ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে।

আইনজীবীদের জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। বিদেশে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. জাকারিয়া মোল্লা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।