উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের ৫ দফা অভিমত
বিচারপতি (প্রতীকী ছবি)

বিচারককে হাইকোর্টের প্রশ্ন: ‘আপনি কি জুডিশিয়াল অফিসার নাকি সিল মারা অফিসার?’

চার শিশুর বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে নির্দেশনা দেয়ার ঘটনায় বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর কাছে হাইকোর্টের প্রশ্ন, ‘আপনি কি জুডিশিয়াল অফিসার নাকি সিল মারা অফিসার?’

আজ রোববার (১১ অক্টোবর) শুনানির নির্ধারিত দিনে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ প্রশ্ন তোলেন।

আদালতে আজ কারো পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুধু সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শিশুদের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিন হাইকোর্টের তলবে হাজির হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন কত সালের এবং ধারা কয়টি তা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানতে চান।

আদালত আরও জানতে চান আপনি মামলার অভিযোগ (এফআইআর) পড়ে সিল মেরে দিলেন দেখলাম। এটা কোন ধরনের ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ। এটা কি আপনি জুডিশিয়াল অফিসার হিসেবে ঠিক করেছেন। এ সময় হাইকোর্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সিল মারা অফিসার নাকি জুডিশিয়াল অফিসার?

এর আগে ওই চার শিশুকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তলবে হাইকোর্ট উপস্থিত হন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ, ওসি মো. আকবর আলী ও চার শিশুর অভিভাবক। সবার শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আদেশ দিতে ২২ নভেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়।

এ ছাড়া ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বাকেরগঞ্জ থানায় করা মামলার কার্যক্রম ২২ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও জানান আদালত। একই সঙ্গে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের নিরাপদে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বাকেরগঞ্জে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের চার শিশুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশদাতা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। এর আগে সকালে তিনি আদালতে হাজির হন। শনিবার (১০ অক্টোবর) রাতে এসে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন বলে আদালতকে জানান তিনি।

বেলা সাড়ে ১১টায় সশরীরে তাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে অভিভাবকসহ ওই চার শিশু ও বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) উপস্থিত থাকতেও বলা হয়। সে অনুযায়ী রোববার সকালে তারা হাইকোর্টে উপস্থিত হন।

এ বিষয়ে চার শিশুর বক্তব্য শুনতে তাদের বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারকের খাস কামরায় নিয়ে যাওয়া হয়।