আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

অবকাঠামো নির্মাণ করাই বিচার বিভাগের শেষ দায়িত্ব নয়: আইনমন্ত্রী

অবকাঠামো নির্মাণ করাই বিচার বিভাগের শেষ দায়িত্ব নয় বলে মন্তব্য করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়বিচার জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া না যাবে ততক্ষণ আসল সম্মান আমরা পাব না। জনগণের কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার জন্য বিচার বিভাগের সবাইকে একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

পটুয়াখালীতে ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চার তলাবিশিষ্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা, যেখানে নাগরিকদের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। এই সাংবিধানিক অঙ্গীকারের আলোকে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কারণ আইনের শাসনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আইনের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা। যে সমাজে আইনের শাসন নেই, সেখানে আইনের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত। আইন মানুষকে যেমন নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনই মর্যাদাবান ও পরিশীলিত করে। আইন যেখানে অচল, মানবাধিকার সেখানে ভূলুণ্ঠিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্যেই নিহিত সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশ।

তিনি আরও বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সাথে বিচার বিভাগের মানোন্নয়ন জড়িত। সেজন্য মানসম্পন্ন বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হলে আদালতে বিশেষ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এজলাসের অপ্রতুলতা দেখা দেয়। ফলে বিচারকরা এজলাস ভাগাভাগি করে বিচারিক কাজ চালাতে থাকেন। কিন্তু তাতে করে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ যেমন ভোগান্তির শিকার হন, তেমনি মামলার জট দিনের পর দিন বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন, এমন অবস্থায় ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং পৃথকীকরণকে সুদৃঢ়, দীর্ঘস্থায়ী এবং টেকসই করার জন্য বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। প্রথমেই এজলাস ভাগাভাগি সমস্যা দূরীকরণ, ভবিষ্যৎ প্রয়োজন মেটানোর জন্য আদালত ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় এবং অত্যন্ত সন্তুষ্টির সাথে বলা যায় আজ তা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ রোখসানা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান মিয়া, আ স ম ফিরোজ, এস এম শাহজাদা ও মো. মহিববুর রহমান, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মইনুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।