জাতীয় সংসদ ভবন
জাতীয় সংসদ ভবন

নতুন বছরের ১ম অধিবেশন শুরু সোমবার, সংসদ এলাকায় মিছিল-শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ

আগামী সোমবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের ১১তম অধিবেশন শুরু হবে। এটি সংসদের শীতকালীন ও বছরের প্রথম অধিবেশন। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অধিবেশন চলবে।

তবে অধিবেশনের প্রথম দিনে সাংবাদিকসহ সীমিত সংখ্যক অতিথির সংসদে প্রবেশের সুযোগ থাকছে। ওই দিন সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ-১) তারিক মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, সংসদের শীতকালীন ও বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন ১৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেবেন। শুধুমাত্র ওইদিন সাংবাদিকরা সংসদে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে সংসদে প্রবেশের জন্য করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হতে হবে। এজন্য গতকাল ১৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। করোনা নেগেটিভ হলে নির্ধারিত সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী অধিবেশন হবে নতুন বছরের প্রথম অধিবেশন। রেওয়াজ অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে থাকেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রীসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা হবে।

এর আগে বিশেষ অধিবেশনসহ গত ৪টি অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হয়। প্রতি কার্যদিবসে ৭০-৮০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। করোনা ঝুঁকি এড়াতে মাঝখানে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে আসন বিন্যাস করা হয়। সংসদ অধিবেশন চলাকালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি অধিবেশনে যোগদানের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত করা হয়।

সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদের ১১তম অধিবেশনকে সামনে রেখে গত ৬ জানুয়ারি সংসদ সচিবালয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সংসদ ভবন, সদস্য ভবনসমূহ এবং সংসদ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, সংসদ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ, লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সচল রাখা, সংসদ এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি, এসআইএস সিস্টেম সক্রিয় রাখাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর সংসদের ১০ অধিবেশন শেষ হয়। গত ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া অধিবেশন ছিলো সংসদের বিশেষ অধিবেশন। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ওই অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপর বিশেষ আলোচনা ও সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ওই অধিবেশনের প্রথম দিনেও সাংবাদিকসহ কিছু সংখ্যক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ এলাকায় মিছিল-শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ

এদিকে সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সংশ্লিষ্টদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, একাদশ সংসদ অধিবেশন নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা এবং সংসদ ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আগামীকাল রোববার (১৭ জানুয়ারি) রাত ১২টা থেকে সব ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, অন্যান্য ক্ষতিকারক ও দূষণীয় দ্রব্য বহন এবং যেকোনো প্রকার সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ডিএমপি।

ডিএমপি ঘোষিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ময়মনসিংহ রোডের মহাখালী ক্রসিং হতে পুরাতন বিমান বন্দর হয়ে বাংলামটর ক্রসিং পর্যন্ত, বাংলামটর লিংক রোডের পশ্চিম প্রান্ত হতে হোটেল সোনারগাঁও রোডের সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত, পান্থপথের পূর্ব প্রান্ত হতে গ্রিন রোডের সংযোগস্থল হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত।

মিরপুর রোডের শ্যামলী মোড় হতে ধানমন্ডি-১৬ (পুরাতন-২৭) নম্বর সড়কের সংযোগস্থল, রোকেয়া সরণির সংযোগস্থল হতে পুরাতন ৯ম ডিভিশন (উড়োজাহাজ) ক্রসিং হয়ে বিজয় সরণীর পর্যটন ক্রসিং, ইন্দিরা রোডের পূর্ব প্রান্ত হতে মানিক মিয়া এভিনিউ এর পশ্চিম প্রান্ত, জাতীয় সংসদ ভবনের সংরক্ষিত এলাকা এবং এ সীমানার মধ্যে অবস্থিত সব ধরনের রাস্তা ও গলিপথ।

১১তম জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।