এমপি আউয়ালের অফিসে হত্যার পরিকল্পনা; হত্যা শেষে সুমন জানায়, ‘স্যার ফিনিশ’

রাজধানীর পল্লবীতে মো. সাহিনুদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা আউয়ালের অফিসে নেওয়া হয় এবং হত্যার পর কিলার সুমন লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ আউয়ালকে ফোন করে জানায়, ‘স্যার ফিনিশ’। ২০ মে (বৃহস্পতিবার) বিকালে রাজধানীর কাওরান বাজারের এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার আল মঈন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘‘গত ১৬ মে পল্লবীতে নৃশংসভাবে সাহিনুদ্দিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর পল্লবীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী সুমন এমএ আউয়ালকে ফোন দেয়। ফোনে সুমন বলে, ‘স্যার ফিনিশ’।’’

আউয়ালের সঙ্গে সুমনের ৩০ সেকেন্ড কথা হয় বলেও তিনি জানান।

এর আগে ১৯ মে (বুধবার) রাতে ভৈরবের একটি মাজার থেকে আউয়ালকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। এছাড়া চাঁদপুর থেকে হাসান (১৯) এবং পটুয়াখালী থেকে জহিরুল ইসলাম বাবু (২৭)-কে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ৪/৫ দিন আগে আউয়ালের কলাবাগানের অফিসে বসে সন্ত্রাসী তাহের ও সুমনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য সুমনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সুমনের নেতৃত্বে অন্তত ১০/১২ জন সক্রিয়ভভাবে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া তাদের আরও কয়েকজন যুক্ত ছিল।’

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, হত্যার আগের দিন গত ১৫ মে সুমন, বাবুসহ কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্র ও ছক করে। ১৬ মে তারা পল্লবীর ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়। সাহিনুদ্দিনকে তারা সমঝোতার কথা বলে ডেকে আনে। সাত বছরের ছেলে মাশরাফিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে সেখানে যান সাহিনুদ্দিন। প্রথমে সুমন, মনির, মানিক, হাসান, ইকবাল ও মুরাদসহ ১০/১২ জন সাহিনুদ্দিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। শেষ পর্যায়ে মনির সাহিনুদ্দিনেরর মাথায় এবং মানিক পায়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে বলেও জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।

নিহত সাহিনুদ্দিন ও সুমন গ্রুপের মধ্যে গত দুই মাসে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পল্লবী থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, আলীনগর বুড়িরটেকে আউয়ালের একটি আবাসন প্রজেক্ট করেছে। সেখানে সাহিনুদ্দিনের পরিবারের জমি রয়েছে। সেই জমি দখল করে নিতে চেয়েছিলেন আউয়াল। এ জন্যই মূলত তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।

এমএ আউয়াল নিজের আবাসন প্রকল্প পাহারার কাজে সন্ত্রাসী লালন-পালন করেন। কিলার সুমনকে আউয়াল মাসে ১০/১২ হাজার টাকা দিতেন। হত্যাকাণ্ডে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। তবে এ কাজে কত টাকা ব্যয় হয়েছে নির্দিষ্ট করে তা জানাতে পারেনি র‌্যাব।

র‌্যাব জানিয়েছে, টিটুর মাধ্যমে সুমনের কাছে হত্যাকাণ্ডের জন্য টাকা গেছে।