আইন কমিশনের সদস্য হলেন বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আবু বকর সিদ্দিকী

বিচারালয় যেন বাণিজ্যালয়ে পরিণত না হয়: বিদায় সংবর্ধনায় বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী

দেশের বিচার বিভাগকে স্বর্গীয় আশ্রয়স্থল হিসেবে উল্লেখ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সদ্য বিদায়ী বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বিচারালয় কোনো অবস্থাতেই যেন বাণিজ্যালয়ে পরিণত না হয়। বিষয়টিকে শক্তভাবে রুখতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিচারপতি হিসেবে কর্মজীবনের শেষ কর্মদিবস পালন শেষে বিদায় সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

এদিন আইনজীবীদের পক্ষ থেকে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এবং আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বার সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল মানপত্র পাঠ করেন।

সংবর্ধনায় দেয়া বক্তব্যে আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘বিদায় বেলায় সবাইকে আহ্বান জানাই আসুন একটি সুস্থ, সরল, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক বিচার বিভাগের অবকাঠামো আমরা রচনা করে যাই। আজ আমার বিচারিক জীবনের ইতি টানছি। এই মুহূর্তে একটি দাবি রেখে যেতে চাই, বিচারপ্রার্থীদের এই স্বর্গীয় আশ্রয়স্থল বিচারালয় কোনো অবস্থায়ই যেন বাণিজ্যালয় হিসেবে পরিণত না হয়। এটা বার ও বেঞ্চের উভয়কে শক্তভাবে রুখতে হবে।’

নিজের কর্মজীবনের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৪১ বছরের এ দীর্ঘ বিচারিক জীবনে কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি তার বিচারের ভার আপনাদের ওপর ন্যস্ত।’

সদ্য বিদায়ী এই বিচারপতি বলেন, ‘শেষ সময়ে বলে যেতে চাই, আইনের শাসন ছাড়া কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা চলছে তার সফল অংশীদার হবে এ বিচার বিভাগ।’

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও আপিল বিভাগের বাকি পাঁচ বিচারপতিও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী একজন বিচারপতি ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে থাকতে পারেন। সেই হিসেবে আগামী ২৮ জুলাই তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হবে।

বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া বারে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন তিনি।

পরের বছর ১৯৮০ সালের ২৩ এপ্রিল মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ হন। ২০০৯ সালের ৩০ জুন হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পর স্থায়ী নিয়োগ পান।

২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর তাকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার ছোট ভাই বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের বিচারপতি হয়েছেন ২০১৩ সালেই। পাঁচ বছর পর এসে ২০১৮ সালে আপিল বিভাগে নিয়োগ পান বড় ভাই বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী।