মো: সালাউদ্দিন সাইমুম, সহকারী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বিদ্যমান শ্রম আইনের যুগোপযোগী সংস্কারে কতিপয় প্রস্তাবনা

মো. সালাউদ্দিন সাইমুম:

শ্রম আইন শুধু শ্রমিকদের আইনী সুরক্ষা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আইনই নয়, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এটির কোনো বিকল্প নেই। সভ্যতার মূল চালিকাশক্তি হলো শ্রম। বিশ্বায়নের এই যুগে শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই কেবল সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অগ্রগতি সম্ভব। একটি যুগোপযোগী, কার্যকরী শ্রম আইনই পারে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপদান করতে। প্রখ্যাত শ্রম আইন বিশারদ, বিশ্বের প্রথম শ্রম আইনের কেইস বুক প্রণয়নকারী, কানাডার সুপ্রীম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বোরা লাসকিনের দর্শন ছিলো -আইনকে হতে হবে জীবনমুখী। তিনি বিশ্বাস করতেন, আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আর সেটি করতে হলে শ্রমিকবান্ধব আইনী বাতাবরণ প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। আইনের সুপ্রয়োগ দ্বারা কিভাবে একটি দেশের শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন বিচারপতি লাসকিন।

বিশ্বজুড়ে শ্রমিকবান্ধব শ্রম আইন এখন বড়ই দুর্লভ। সেই কথারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই ২০১১ সালে অক্সফোর্ড থেকে প্রকাশিত শ্রম আইনের প্রণিধানযোগ্য বই The Idea of Labour Law-তে। বইটিতে বলা হচ্ছে যে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শ্রম আইন এখন সংকটময় সময় পার করছে। শ্রম আইন যতটা না নিয়োগকর্তাদের স্বার্থ রক্ষা করছে তার ছিটেফোঁটাও শ্রমিকদের ভাগ্যে জুটছে না। অথচ শ্রমিকদের দেখভাল করাটাই মূলত শ্রম আইনের প্রধানতম উদ্দেশ্য।

শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ব্যতীত সার্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২৩ অনুচ্ছেদ শ্রম ও শ্রমিকের অধিকারকে বিশ্বজনীন, অবশ্যপালনীয় মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কর্ম প্রাপ্তির অধিকার, সমরূপ কাজের জন্য সমান মজুরী, ন্যায্য পারিশ্রমিক, শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকারের মতো বিষয়গুলোকে উক্ত অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। কাজেই শ্রমিকদের আইনগত সুরক্ষা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণের দায় পুরো বিশ্বসমাজের।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব শ্রম সংস্থা (আইএলও)। বিশ্বের ১৮৭ টি রাষ্ট্র এই আইএলও-এর বর্তমান সদস্য। আইএলও-এর প্রতিটি সনদে শ্রম ও শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার দৃপ্ত ঘোষণা ব্যক্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতার ঠিক পরপরই বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও-এর সদস্য রাষ্ট্র হয় এবং অদ্যাবধি সর্বমোট ৩৩টি আইএলও সনদ অনুসমর্থন করেছে। অপরদিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন আমাদের সুমহান সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে সকল প্রকার শোষণ হতে মেহনতি শ্রমিক সমাজের মুক্তির কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে ব্যক্ত হয়েছে। শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঠিক পরের অনুচ্ছেদেই শ্রমিকদের কর্ম ও মজুরীর অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে (অনুচ্ছেদ ১৫)। এছাড়াও ৩৪ অনুচ্ছেদ সকল প্রকার জবরদস্তিমূলক শ্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

কাজেই মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র, আইএলও সনদ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান যেখানে শ্রমিকদের অধিকারের ম্যাণ্ডেট ঘোষণা করেছে সেখানে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, শ্রমিকদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ অবশ্য প্রতিপালনীয় কর্ম হিসেবেই বিশ্বব্যাপী আজ পরিগণিত। আর শ্রমিকদের সেই সুরক্ষাবলয়ে আনতে চাইলে সর্বাগ্রে যেটি প্রয়োজন সেটি হলো শ্রমিকবান্ধব যুগোপযোগী একটি শ্রম আইন। সে লক্ষ্যে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে শ্রম আইন প্রণীত হয়। পূর্বের ২৫ টির মতো আইনকে পুনর্বিন্যস্ত করে নবসাজে প্রণীত হয় এ একক শ্রম আইন। ২০০৬ সালের শ্রম আইনটি নিঃসন্দেহে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক বটে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যেটি পারেনি সেটি করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতে আজও একক সুসমন্বিত শ্রম আইন নেই, বরং সেখানে অনেক ধরণের শ্রম আইন রয়েছে। শ্রম সংক্রান্ত সকল বিধি-বিধানকে একটি একক আইনের বলয়ে নিয়ে আসাটা শ্রম আইন, ২০০৬-এর একটি বড় কৃতিত্ব। শ্রমিক নিয়োগ, মজুরী, শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তি, ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বিধি-বিধান বর্তমান এ শ্রম আইনে বিধৃত রয়েছে। মুদ্রার অপরপিঠে যদি তাকাই, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান বাংলাদেশের শ্রম আইনে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও আইনটিতে দুই বারের মতো সংশোধনের প্রয়োজন পড়েছে, প্রথমবার ২০১৩ সালে এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালে সর্বশেষ সংশোধনী এসেছে। ইতিবাচক অনেক বিধি-বিধান সংযুক্ত হলেও শ্রম আইন এখনও পুরোপুরি শ্রমিকবান্ধব হয়ে উঠতে পারেনি। বিদ্যমান শ্রম আইনে কিছু দুর্বলতা রয়েছে যা আশু ভিত্তিতে নিরসন করা না গেলে শ্রমিকদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অনিশ্চয়তার দোলাচলে পড়ে যাবে, মুখ থুবড়ে পড়বে শ্রম আইন প্রণয়নের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। শ্রম আইনকে তাই প্রকৃত শ্রমবান্ধব আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে কিছু বিষয়ের প্রতি সত্বর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত। নিম্নে বিদ্যমান শ্রম আইনের পরিমার্জন, আধুনিকায়ন ও সংস্কার বিষয়ক কিছু প্রস্তাবনা উল্লেখ করা হলো-

১। তদারকি কর্মকর্তার কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী তিনিও একজন শ্রমিক বিধায় পুনরায় তাকে শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ২(৬৫)-তে অন্তর্ভুক্ত করা সমীচীন হবে। মূল শ্রম আইনে তদারকি কর্মকর্তা শ্রমিক হিসেবে বিবেচিত হতো কিন্তু ২০১৩ সালের সংশোধনীতে তারা শ্রমিকের সংজ্ঞার আওতা বহির্ভূত হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে মুজিবুর রহমান সরকার বনাম শ্রম আদালত, খুলনা (৩১ ডিএলআর ৩০১)-মামলায় বিজ্ঞ আদালত ধার্য করেন যে, কোনো ব্যক্তি শ্রমিক কি না সেটা মূলত তার কর্মের প্রকৃতির উপর নির্ভর করবে, পদবীর উপর নয়। সোনালী ব্যাংক লি. বনাম চন্দন কুমার নন্দী (৪৮ ডিএলআর ১৯৯৬) মামলায় আদালত একজন সহকারী হিসাবরক্ষককে শ্রমিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অপরদিকে, ৫০ ডিএলআর-এর এক মামলায় দেখা যায় যে, একজন কর্মীর পদবী প্রডাকশন ম্যানেজার তবুও তিনি আদালত কর্তৃক শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

২। গৃহকর্মীদের অধিকার সংক্রান্ত ২০১১ সালের আইএলও কনভেনশনে গৃহকর্মীদেরকে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অথচ দেশে বিদ্যমান শ্রম আইনে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংশোধনী এলেও গৃহকর্মীরা উপেক্ষিতই থেকে গেছে। অদ্যাবধি শ্রম আইনের সুরক্ষা বলয়ে তারা প্রবেশাধিকার পায়নি। শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১(ণ) দ্বারা গৃহকর্মীদেরকে শ্রম আইনের আওতা বহির্ভূত রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য ২০১১ সালের বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি বনাম বাংলাদেশ এবং অন্যান্য মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ দশ দফা নির্দেশনা দেয় এবং তন্মধ্যে ৪ নং নির্দেশনায় আদালত গৃহকর্মীদেরকে শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইন ২০০৬-এর ‘শ্রমিক’ সংজ্ঞার আওতায় আনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। কাজেই গৃহকর্মীদেরকে শ্রমিক হিসেবে বিদ্যমান শ্রম আইনে অতি সত্বর অন্তর্ভুক্ত করাটা জরুরী।

৩। মোট শ্রমিকের সিংহভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বিধায় তাদেরকে শ্রমিকের সংজ্ঞার আওতায় আনাটা অত্যন্ত জরুরী। শ্রম আইনের চারটি জায়গায় শ্রমিকের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করা [ধারা ২(৬৫), ১৫০, ১৭৫, ২৩৪] হলেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সকল শ্রমিককে শ্রম আইনের আওতায় আনতে হবে নতুবা শ্রম আইনটি শ্রমিকদের বৃহত্তর কল্যাণে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হবে।

৪। দেশে জাতীয় ন্যূনতম মজুরী নেই। অবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা করা উচিত। উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ওয়েজ রিপোর্ট ২০২০-২১ এ দেখা যায় যে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ন্যূনতম মজুরী প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে।

৫। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক সমর্থন ২০১৮ সালের সংশোধনীতে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলেও তা যথার্থ নয়। আইএলও-র চেতনার সাথে সাযুজ্য রেখে শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৭৯(২)-কে সংশোধন করা যেতে পারে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিক সমর্থনের শতাংশের বাধ্যকরী বিধান উঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

৬। আইএলও কনভেনশন-১২১ (Employment Injury Benefits Convention, 1964)  অনুসমর্থন এখন অতীব জরুরী। বিদ্যমান শ্রম আইনে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। শ্রম আইনের পঞ্চম তফসিলের দ্বিতীয় কলামে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ মাত্র ২ লাখ টাকা নির্ধারিত রয়েছে। অপরদিকে ঐ একই তফসিলের তৃতীয় কলামে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত স্থায়ী অক্ষমতার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ মাত্র আড়াই লক্ষ টাকা। কাজেই শ্রম আইনের ১৫১ নং ধারা এবং পঞ্চম তফসিলকে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসারে সংশোধন করাটাও এখন সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইএলও কনভেনশন-১২১ অনুসারে বিদ্যমান শ্রম আইনে ক্ষতিপূরণের বিধি-বিধানসমূহকে ঢেলে সাজালে আহত ও নিহত শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ লাভের পথ সুগম হবে। এতে করে আরও অধিক শ্রমিকবান্ধব হবে শ্রম আইন। শ্রমিকের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে ব্লাস্ট ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করেছে। এটা সন্তোষজনক বিবেচনা করা যেতে পারে।

৭। শ্রম আইনে নারী শ্রমিকের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী সংক্রান্ত পৃথক বিধান সংযুক্ত করা উচিত। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যাধিক্য থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান শ্রম আইনে নারী শ্রমিকের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী সংক্রান্ত স্বতন্ত্র কোনো বিধান নেই।

৮। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মহামারির সময়ে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করণার্থে শ্রম আইনে স্বতন্ত্র ও সুস্পষ্ট বিধি-বিধান সংযুক্ত করা উচিত।

৯। নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে শ্রম আইনে পৃথক বিধি-বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও অদ্যাবধি সেটির বাস্তবায়ন হয়নি।

১০। শ্রম আদালতের বিচার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে হবে। শ্রম আইনের ২১৬ ধারা অনুসারে, মামলা দায়েরের ৬০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ প্রদানের বিধান থাকলেও সেটি ঠিকঠাকভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে না বলে সম্প্রতি ব্লাস্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। ‘Tire Them Out: Challenges of litigating compensation claims under the Bangladesh Labour Act 2006’ শীর্ষক ব্লাস্টের গবেষণা বলছে, ক্ষতিপূরণের মামলা নিষ্পত্তিতে শ্রম আদালতগুলোতে গড়ে ৬৩০ দিন সময় লেগেছে।

স্মর্তব্য বিষয় এই যে, আইন পুরোপুরি স্থির বা নিশ্চল কোনো কিছু নয়, সময়ের পরিক্রমায় এতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন আবশ্যক হয়ে উঠতে পারে। শ্রম আইনও তার ব্যতিক্রম নয়। উপরিবর্ণিত প্রস্তাবনাসমূহ বিদ্যমান শ্রম আইনের উৎকর্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির পথনির্দেশনার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াসমাত্র। শ্রম আইনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো এর প্রায়োগিক সীমাবদ্ধতা। আশা করা যায় যে, প্রয়োজনীয় সংস্কার সাপেক্ষে শ্রম আইন দ্রুত তার সীমাবদ্ধতাগুলোকে কাটিয়ে উঠবে এবং অচিরেই আমরা এটির কাঙ্খিত ও পরিমার্জিত রূপটি প্রত্যক্ষ করতে পারবো। আগামীর দিনগুলোতে শ্রমিকবান্ধব সমাজ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে শ্রম আইন ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখুক সেই প্রত্যাশা রইলো।

লেখক- সহকারী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।