হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

শিশুটি ভারতীয় নাগরিক মায়ের সঙ্গে থাকবে, সপ্তাহে তিন দিন বাবা সময় কাটাবেন

প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি শিশু মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় আপাতত তার মায়ের সঙ্গে থাকবে। আর বাবা সপ্তাহে তিন দিন শিশুটির সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এই তিন দিন সকাল নয়টায় বাবা শিশুটিকে নিয়ে আসবেন। দিন শেষে সন্ধ্যায় আবার শিশুটিকে তার মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেবেন বাবা।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার দুই মাসের জন্য এ আদেশ দিয়েছেন। আদেশে ভারতীয় নাগরিক শিশুটির মায়ের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে।

ফ্লাডের পরিচালক কাজী মারুফুল আলম ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ওই রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ফাইজা মেহরীন। শিশুটির বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ রেজা সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

শিশুটির বাবা ও মায়ের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘এখানে জেদাজেদির প্রশ্ন নয়। শিশুর সর্বোচ্চ কল্যাণ বিবেচনা করে বিষয়টি সমাধান করে ফেলুন। যৌথভাবে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব যদি দেন, তাহলে যেকোনো সময় আদেশ দেওয়া যাবে। আপনারা নিজেরা বসেন।’

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৯ আগস্ট হাইকোর্ট বাংলাদেশে অবস্থান করা ভারতীয় নাগরিক নারী ও তাঁর শিশুসন্তানকে ২৬ আগস্ট আদালতে হাজির করতে গুলশান থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেন। সে অনুসারে শিশুসহ মা আজ আদালতে হাজির হন। আদালত শিশুটির ভারতীয় নাগরিক মা ও বাংলাদেশি নাগরিক বাবার বক্তব্য শোনেন।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ভারতীয় মুসলিম পরিবারের মেয়ে সাদিকা শেখের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সামিউর নবীর ২০১৭ সালের ৪ জুলাই হায়দরাবাদে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁরা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন। ব্যবসায়িক কারণে পরে তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন। ২০১৮ সালে এই দম্পতির এক ছেলেসন্তান হয়। একপর্যায়ে তাঁদের সংসারে মতপার্থক্য দেখা দেয়। সামিউর নবী ১১ আগস্ট বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। পরে তিনি সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখতে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন।

অন্যদিকে নবীর বিরুদ্ধে স্ত্রী সাদিকাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। সাদিকা স্বামীর বাড়িতে ছিলেন। বিষয়টি জানিয়ে সাদিকার স্বজনেরা মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। এর ধারাবাহিকতায় শিশু ও তার মাকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে হাইকোর্টে রিট করা হয়।