মামলাজট নিরসনে প্রতিবছর পাঁচ শ বিচারকের পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন: আইন কমিশন চেয়ারম্যান

বিদ্যমান মামলাজট নিরসনে প্রতিবছর নতুন পাঁচ শ বিচারকের পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তিনি বলেন, ‘ড্রাসটিক অ্যাকশন’ না নেওয়া হলে ৩৫ লাখ মামলা নিয়ে বিচার বিভাগ ভেঙে পড়বে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার নিচের কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের জন্য বাজেট বেড়েছে। তবে বিচারক লাগবে। বিচারক না থাকলে কোনোটাই সফল হবে না। সেদিকে নজর দেওয়া দরকার।

আইন কমিশনের রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রোববার এক অনুষ্ঠানে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এসব কথা বলেন। রাজধানীর বিচার প্রশাসন ইনস্টিটিউট ভবনে অবস্থিত কমিশনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠানটি হয়।

এ বি এম খায়রুল হক বলেন, নিচের কোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টে যে আয় হয়, এটি কোথাও প্রতিফলিত হয় না। বিচার বিভাগের ব্যয়ের চেয়ে আয় সম্ভবত বেশি হবে বলে তাঁর ধারণা। সাবেক এই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যে কোর্ট ফি ও অন্যান্য ফি বিচারপ্রার্থীরা দিচ্ছেন, তাতে বিচার বিভাগ কত টাকা আয় করে তা প্রতিফলিত হওয়া দরকার। যাতে দেশের মানুষ জানতে পারে বিচার বিভাগ শুধু খরচই করে না, তারা যথেষ্ট আয়ও করে। এটি আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জানা উচিত।’

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রচলিত আইন পরীক্ষা–নিরীক্ষার মাধ্যমে যুগোপযোগী সংস্কার ও ক্ষেত্রমতে নতুন আইন প্রণয়নে সরকারের কাছে সুপারিশ করার জন্যই আইন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৬ সালে আইন কমিশন প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে কমিশন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ–১৯৭৫ বাতিলের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করে। জাতির পিতার খুনিদের বিচারে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আইনমন্ত্রী বলেন, সমাজ শৃঙ্খলা চায়। শৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করতে আইন প্রয়োজন। সমাজের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে আইনের গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। তাই আইন কমিশনের গুরুত্ব অনেক। এ পর্যন্ত আইন কমিশন ১৬০টির বেশি সুপারিশ, মতামত ও প্রতিবেদন সরকারের কাছে দিয়েছে, যার অনেকগুলো পরে চূড়ান্ত আইনে পরিণত হয়েছে।

আইন গবেষণার ক্ষেত্রে আইন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতার জন্য এরই মধ্যে আইন কমিশনের নতুন জনবলকাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান আনিসুল হক।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, আইন কমিশনের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর, আইনসচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য দেন।