আইন ও আদালত
আইন ও আদালত

ন্যায়ালয়ে রাজার ঘন্টা!

সাব্বির এ মুকীম:

দিল্লি ন্যায়ালয়ে হন্তারকের গুলিতে এক অভিযুক্ত খুন হয়েছে। খুনীরা নিহত হয়েছে পুলিশের গুলিতে। খুনিরা ছিলো এডভোকেট। আসলে তারা এডভোকেট ইউনিফর্ম পোশাক পরিধান করে ছিলো। তারা এডভোকেট এটা প্রমাণিত নয়, তেমনি তারা এডভোকেট নয়, সেটাও প্রমাণিত নয়। তদন্তের পর জানা যাবে খুনীদের আরও এক পরিচয় এডভোকেট তথ্য টা সত্যি কি-না।

কুমিল্লা ন্যায়ালয়ে বছর দুয়েক আগে একটিখুন হয়েছিল – একেবারে খাস কামরায়। তবে খুনী আর নিহত একই মামলায় সহ আসামি এবং তাদের কেউ এডভোকেট ছিলো না।

ভারতের দিল্লির লোমহর্ষক ঘটনা তথা এডভোকেট ইউনিফর্ম পোশাকে খুনীর খুনকান্ড যদি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলা বা অন্য যে কোনো জেলার ঘটতো- তাহলে বেশ ক’দিন ন্যায়ালয়ে খুব পুলিশি সক্রিয়তা দেখা যাবে। সেই ক্ষণে কিছু নাটক তৈরী হবে, যা আমাদের সামগ্রিক বিচার ব্যাবস্থারএকটা রোগ এর প্রকাশ হবে।

যেহেতু এডভোকেট বেশ এ হত্যাকান্ড- তাই পুলিশ চাইবে আগত সকল এডভোকেট ইউনিফর্ম পোশাক পরিহিত ব্যক্তিকে কায়িক পরীক্ষা করতে। এতেই সেসব নাটক হবে। পুলিশ যে কখনো কখনো সীমা লংঘন করে না, তা নয়। দায়িত্ব পালন করতে গেলে একটু আধটু সীমা লংঘন না হওয়াটাই বরং অস্বাভাবিক – আর সে দায়িত্ব যদি পালন করে বাংলাদেশের পুলিশ – তাহলে তো কথাই নাই। মোদ্দাকথা নিরাপত্তা দায়িত্বের মূল সুত্র হলো কোনো বিশেষ বিবেচনা না করে সকল কে সন্দেহের আওতায় এনে নির্বিশেষে সকলকে পরীক্ষা করে ছাড় দেওয়া।

এই সুত্রটি পুলিশ যখন কাজে লাগায় আমাদের সকলের প্রয়োজনেই, তখনই ন্যায়ালয়ে প্রবেশরত কোনো না উকিল সাহেবদের ইগো তে তা লেগে যায় – আমাকে চিনেন না, আমাকে পরীক্ষা? হয়তো বেচারা কনষ্টেবল ৩০০ মাইল দূরের কোনো জেলা থেকে বদলী হয়ে এসে ক’দিন আগেই অকুস্থল জেলায় জয়েন করেছে। যেখানে পুলিশকে তাদের কাজে সহায়তা করা দরকার, সেখানে উল্টো পুলিশের সাথে বচসা লেগে যায়। যেনো ডিগনিটি অব এডভোকেট রক্ষাই হয় পুলিশের সবচে নীচের স্তরের কর্মচারীদের কর্তব্য পালনে সুস্পষ্ট বাধা দেয়ার মাধ্যমে।

এটা রোগের প্রাথমিক একটা চিহ্ন। ন্যায়ালয়ে আংগিনায় নৈর্ব্যক্তিকভাবে কান পাতলে রোগের বহু বহু চিহ্ন নজরে আসবে। কান পাতলেই শোনা যাবে অভিযোগ আর অভিযোগ – উকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ। উকিলের মুহুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পেশকার, সেরেস্তাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ। মোটামুটি বিচার ব্যাবস্থার প্রত্যেক পরোক্ষ, প্রত্যেক প্রত্যক্ষ উপাদানের- কোনো একটিও বাদ নয়, গুনে গুনে প্রত্যেকটি উপাদানের বিরুদ্ধে বিচার ব্যবস্থার মূল স্টেকহোল্ডারদের এন্তার অভিযোগ কানে সুনামীর ঢল নামায়। এই অভিযোগ কিছু টা ধৈর্যহীনতা, কিছুটা তথ্যহীনতা আর কিছুটা বিচার ব্যাবস্থার কারণে অন্যায় করতে না পারার অসন্তোষ জনিত হলেও, শতকরা ৯০ ভাগ অভিযোগ বঞ্চনা জনিত ক্ষোভ এর প্রতিক্রিয়া।

উকিল ১০ দিনে জামিন হবে বলে টাকা নিছে এখন ২ মাসেও জামিন হয় না, টাকা নেয়ার পর উকিল ঠিকমত কথাই বলে না৷ আজকে থেকে ১০ বছর আগে, আমার বাবা কে এন আই এক্ট এর মামলায় সমন হবে বলে ৫ হাজার টাকা নিয়েও কুমিল্লার এক উকিল বিকাল ৪টা পর্যন্ত বসায়ে রেখেছিলেন। অথচ আমি উকিল হবো, ওনার বড়ো আশা ছিলো বলেই তখনই আমি উকিল ছিলাম এবং সেই তথ্য আমার বাবা সেই উকিল সাহেব কে অবগত করে ছিলেন। তবুও দীর্ঘদিন ধরে ডায়বেটিস রোগে ভোগা আমার বাবা অকারণে ক্ষুধার্ত কয়েক ঘন্টা ধরে আদালতে বসে ছিলেন। কয়েকদিন আগে কয়েকজন উকিল সাহেব মিলে আসামিকে বগুড়াতে রেখেই আগাম জামিন বাণিজ্য করতে দেখা গেলো যাতে জড়িতদের মধ্যে কেবল ২জন মামলায় পড়েছেন, বাকী জড়িত উকিল সাহেবরা হয়তো নিজেদের অবস্থান জনিত সুবিধায় নিজেদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন।

অপ্রয়োজনীয় সময় ক্ষেপণ, অনুপযুক্ত আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ, আর্থিক সহ নানা রকম ফেরের প্রবঞ্চনা, গয়রহ অভিযোগে বিচরপ্রার্থীগণ এডভোকেট সাহেবদের অভিযুক্ত করে যান নিরন্তর। ন্যায়ালয়ে কৌশল করতে গিয়ে বিচারক কে ভুল বোঝানোর চেষ্টা, অকারণে বিচারক সহ বিচার-কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, পোশাক ও আচরণ কাংখিত মানের চাহিদা পূরণ না করা এরকম হাজার, লক্ষ অভিযোগ; সব যে সত্য তা নয় আবার সব যে মিথ্যা সেটাও নয়।

এতো এতো অভিযোগ এর পরিস্থিতি তৈরী হওয়ার একটা মূল কারণ হলো উকিল সাহেবদের বিরুদ্ধে বিচার চাওয়ার কোনো ম্যাকানিজম নাই। নামকাওয়াস্তে থাকাকে বাস্তবে নাই ই বললে তা ভুল হয় না। একজন উকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিচার পাওয়া যায় এমন কোনো ব্যবস্থার ধারণা আমাদের সাধারণ বিচার প্রার্থীদের নাই। এমনকী উকিলেরও যদি উকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তা সহজে জানানোর অনায়াস বিশ্বাস উকিলদের মাঝেই প্রশ্নবিধ্য।

এর ফলাফল কি? গড়পরতা সাধারণ মানসে ওকালতি পেশার লোকএকটি ভয়ানক কিছু। ঢাকার ব্যারিস্টার এলিট শ্রেণীর কিংবা পয়সার আরামে থাকাদের কথা বাদ দিলে উকিলের কাছে মেয়ে বিয়ে ও বাসা ভাড়া সহজে দিতে চায় না। শোনা যায়, দেখা যায় বিরল কিছু ক্ষেত্রে কোনো কোনো উকিল সাহেবদের মৃতদেহদাফনের সময় প্রবঞ্চিত বোধ করা মক্কেলদের বিরূপ উপস্থিতির কারণে পুলিশ ডেকে লাশ কবরে নামাতে হয়। গত করোনা কালে উকিল সাহেবেরা যে অপরিসীম অসহায়ত্বে পড়েছিলেন তাতে তাদের জন্য কারওই মায়া জাগে নাই।

বোঝার উপর শাকের আটি সারা দুনিয়াতে বাংলাদেশের এডভোকেটশিপ ই একমাত্র পেশাগত উপাধী যা অর্জনে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক পেশাগত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নাই- পেশাগত জীবনে আপগ্রেডেশন প্রশিক্ষণের কথা তো কল্পনাই করা যায় না। সেসবের প্রতিক্রিয়া হলো নীল জিন্স পরা, কেডস পরা উকিল সাহেবদের এজলাসে সাবমিশন রাখতে দেখা যায়, এজলাস চলাকালে ক্লাব ঘরের পরিবেশ নয় পিনপতননীরবতার পরিবেশ বজায় রাখতে দেখা যায় না। উকিলদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা কমেন্টগুলো না পড়লেই সেসব আর সেসবেরপেছনের ক্ষোভ অদৃশ্য হবে না।

শুনতেছি, বিচার ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন এর জন্য ২৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অনেক টেন্ডার হবে, টেন্ডার বাণিজ্য হবে। ন্যায়ালয়ের কক্ষগুলো ডিজিটাল ডিভাইসে চকচক করবে। কিছু বিভাগীয় কর্মকর্তা প্রকল্পের দায়িত্ব পাবেন, হয়তো তাঁদের কাউকে কাউকে বেগম পাড়ার টিকেট কাটতেও দেখা যাওয়া অভূতপূর্ব বিষয় হবে না। কিন্তু অভিযোগ রয়েই যাবে। কারণ এর আগে এডিআর প্রকল্প, পৃথকীকরণ প্রকল্প আমাদের চোখের সামনের নজীর, এখনও আড়ালে পড়ে নাই।

কি কারণে তেমন আশংকা জাগে? কারণ কোনো গবেষণা হয় নাই। রায়গুলোতে অমুক শব্দ কতবার আসছে এই লিখেই বাংলাদেশের আইনী গবেষণার একলাইনে বর্ণনা হয়। শব্দের কচলাকচলি করেই সব পিএইচডি যেনো! সেদিন দৈনিকপ্রথম আলোতে একআইনের শিক্ষিকার- বাল্য বিবাহ গবেষক হিসেবে দেয়া সাক্ষাৎকার পড়লাম। হাজার লাইনের সে সাক্ষাৎকারে তিনি কেবল একটি লাইন ই উচ্চারণ করেছেন – যাকে গবেষক সুলভ বলা যায় – “কোভিডের কারণেই বাল্য বিবাহ বেড়েছে কিনা তা আমি বলতে পারবো না।” বাকী পুরাটাইছিলো চর্বিত চর্বন, চায়ের দোকানের বাল্য বিবাহ আলাপ কে প্রথম আলো মেশিনে এরচে বেশী বিষয়বস্তু বহুল সাক্ষাৎকারহতো বোধ করি।

ন্যায়ালয় আংগিনার দালালেরা কিভাবে আর কেনো ই বা দালালীতে আসে তা নিয়ে কোনো গবেষণা আছে? মানুষ কেনো দালালের খপ্পরে পড়ে? কুমিল্লারবার্ড যেমন মহাজনদের চক্রবৃদ্ধ সুদ ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে ক্ষুদ্র ঋণের আবিষ্কার করেছে, তেমনে দালালদের বিকল্প নিয়ে কোনো গবেষণা হয়েছে? মুহুরিদের বেদনা কি? কেনো বেতন বাড়লেও বেঞ্চ অফিসার, পেশকার, সেরেস্তাদার, পিয়ন, জারিকারকেরা সহ বিভিন্ন সকল ও প্রত্যেক রকম উপাদানগুলো অনেকেই আগের মতোই অঢেল পরিমান অনুপার্জিত অর্থ কামায়? উকিলেরা কিভাবে দূর্বৃত্তপনা আর দূর্নীতিপণার স্লুইসগেট হচ্ছে সে নিয়ে গবেষণা আছে? এমন অজস্র প্রশ্নের উত্তর একটাই, আর তা হলো- না, নেই। এমন অজস্র বিষয়ে গবেষণার উপযুক্ত হলেও গবেষণা এখন সব টেবিলে টেবিলে শব্দে, শব্দে আর পাওয়া- না পাওয়ার তূলনামূলকতালিকাকরণেই সীমিত। কবি নজরুলের নারী তালাকের ফতোয়া খোঁজ সিন্ড্রম থেকে আমাদের আইনী গবেষণা আজও বের হতে পারে নাই।

এমনকী আদালতে মাতৃভাষা বলে চিল চিৎকার তোলা হয়, সে নিয়েও কোনোও গবেষণা নাই। আদালত শব্দের বদলে আমি ইচ্ছে করেই “ন্যায়ালয়” শব্দ ব্যবহার করেছি। এই সংস্কৃত শব্দটি ভারতে ব্যবহার হয়। যেখানে ন্যায় বিচার হয় তাই ন্যায় এর আলয় বা ন্যায়ালয়। আমাদের আইনীগবেষকেরা ন্যায় বিচার জপতে জপতে এশকে দেওয়ানা হলেও বাংলায় ভালো করে বোঝাতে পারেন না, এই ন্যায় বস্তুটা কি! কত সহজ, ন্যায় মানে রকম, একই রকম। করিম রহিমের ন্যায় মানে করিম দেখতে পুরা রহিমের মতন তেমনি করিম ও রহিমদুইজনেইএকই রকম অপরাধ করলে করিমের যে বিচার হবে, যে সাজা হবে রহিমেরও সেই বিচার-সাজা হবে। এটাই করিমের ন্যায় বিচারে রহিমের বিচার।

আইন শিক্ষা ব্যাবস্থা দিয়ে শুরু হয়ে সার্বিকভাবে সামগ্রিক বিচার ব্যবস্থা বিচারপ্রার্থী আরামের ব্যাপারে অমনোযোগী- এটা সুস্পষ্ট। আর সে কারণেই উকিল, মুহুরি সহ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করার স্বচ্ছ আর স্পষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি বিচার প্রার্থীদের অনাস্থা বাড়বেই। বিচার ব্যাবস্থার প্রতি বিচারপ্রার্থী দের অনাস্থা অর্থনৈতিকভাবেতাৎক্ষণিক ক্ষতি উকিল মুহুরিদেরই হবে। করোনায় ২বছর আদালত বন্ধ -প্রায় থাকলেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়নি। তাই সে আস্থা বজায় রাখতে অবশ্যই উকিল, মুহুরিগয়রহ নির্বিশেষে বিচার বিভাগের সকল এবং প্রত্যেকটি উপাদানের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগ প্রকাশ করা এবং উপশম হওয়ার ব্যবস্থা আনতে হবে। বার কাউন্সিল ট্রাইবুনালের কাছে যাওয়া সহজ সাধ্য নয়।

এক্ষেত্রে আমার প্রস্তাবনা, আমরা আমাদের রূপকথা থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারি। সে হলো রাজ দরবারের ঘন্টা। রাজা তার দরবারের সামনে ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখতেন,ঝোলানোরশিরসাহায্যে সেই ঘন্টা বাজলে রাজা বুঝতেন প্রচলিত ব্যবস্থায় কেউ ন্যায় বিচারের সুযোগ না পেয়ে সরাসরি রাজার কাছে নালিশ জানাতে এসেছে। এই ঘন্টা দিয়ে রাজার কাছে রাজার বিরুদ্ধেও নালিশ তোলা যেতো। কোনো একবার এক মা-গাধা মুখ দিয়ে রশিটেনে রাজার ঘন্টা বাজায়।পরে তদন্ত করে দেখা যায়, তার বাচ্চা কে একনাগরিক হত্যা করেছে। রাজা সে নাগরিকের বিচার করেন, সে গাধাটিকে পালন করার ভার প্রদান করে। মোঘল বাদশা জাহাঙ্গীরের সম্বন্ধে তো সুপ্রতিষ্ঠিত এনেকডটই রয়েছে যে তিনি ঘন্টার নালিশে নিজেই নিজের মৃত্যু আদেশ দিয়েছিলেন।

রাজদরবার শব্দের ইংরেজি হলো Court (কোর্ট)। প্রতিটি জেলায় জেলায় কোর্টের প্রধান বিচার কর্মকর্তা হলেন জেলার জেলা ও দায়রা জজ। তিনি প্রশাসনিক প্রধানও। বিচার কর্ম নয় বরং প্রশাসনিক কর্ম হিসেবে তাঁকে প্রধান করে সংশ্লিষ্ট প্রাসংগিক কয়েকজন কে দিয়ে একটি অভিযোগ শোনার কমিটি করা যায়। এ কমিটির কাছে বিচার ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সকল এবং প্রত্যেক যে কোনো উপাদানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবে।

জেলা জজের প্রশাসনিক আদেশ ও উকিলদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ ডিসিপ্লিন আনবে যাতে উকিলেরাই উপকৃত হবে। আইন ছিলোই- শিক্ষানবীশেরা প্রতিদিন জেলা জজের কাছ থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নিবে। এমন করলে আশা করাই যায় সমাজ কেবল উকিলের অন্ধকার রূপ নিয়েই আলোচনা করবে না। আলাপের শুরুতে নিম্ন স্তরের পুলিশের সাথে তাদের কর্তব্য পালন কালে আলোচ্যইগো জনিত দূর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটলে পুলিশেরও অভিযোগ জানানোর সুযোগ আছে এ প্রত্যয় যখন জন্মাবে পুলিশ ও তখন বাধ্য হবে এডভোকেট সাহেবদের সাথে দায়িত্ব পালনের সময় ডিগনিটি বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে। কারন সে তখন জানবে যেখানে সে নিজে অভিযোগ করতে পারে সেখানেই আবার তার বিরুদ্ধে ও অভিযোগ করা যায়।

অবশ্যই এটা কেবলই প্রস্তাব মাত্র। যদি সত্যি ই পদক্ষেপ নিতে হয় তবে তার আগে সত্যিকারের উপযুক্ত গবেষণা করে নিতে হবে, দেখা যাবে অনেক অনেক ভালো আবার কাজের পন্থা উদ্ভাবন হবে।

একজন উকিল হিসেবে এই লেখা আত্মসমালোচনা মূলক। একজন পুলিশ কর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে তার পেশার কোনো দিক নিয়ে নির্মম ও উপর্যুপরি সমালোচনা করতে পারেন না, একজন বিচারক কর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে তার পেশার কোনো দিক নিয়ে নির্মম ও উপর্যুপরি সমালোচনা করতে পারেন না, একজন ম্যাজিস্ট্রেটকর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে তার পেশার কোনো দিক নিয়ে নির্মম ও উপর্যুপরি সমালোচনা করতে পারেন না, একজন এসিল্যান্ড বা টিএনও কর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে তার পেশার কোনো দিক নিয়ে নির্মম ও উপর্যুপরি সমালোচনা করতে পারেন না। এটা চাকরীরসীমাবদ্ধতা।

কিন্তু একজন উকিল কর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে তার পেশার কোনো দিক নিয়ে নির্মম ও উপর্যুপরি সমালোচনা করতে পারেন, এটাই স্বাধীনতা, এটাই ওকালতি পেশার অহংকার। সেজন্যেইএ পেশার স্বাধীনতার যত্ন নেয়া বাঞ্ছনীয় কারন আমরা বারে বারে শিখেছি, স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।

লেখক- অ্যাডভোকেট, কুমিল্লা জজ কোর্ট।

(https://www.facebook.com/samukim1/) (samukim1@gmail.com)