উচ্চ আদালত
উচ্চ আদালত

রাজারবাগ পীরের সিন্ডিকেট নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল খারিজ

রাজারবাগ পীরের সিন্ডিকেট নিয়ে দুদক, সিআইডি ও সিটিটিসিকে তদন্ত করতে বলা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আপিল খারিজ হয়ে গেছে। ফলে বহাল থাকলো পীর সিন্ডিকেট নিয়ে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে ২৪ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। পরে আজ আদেশ দেওয়া হলো।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

মফিজুল ইসলামের করা আপিল আবেদনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

২৩ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ পীর দিল্লুর রহমান ও তার দরবারের সব সম্পদের হিসাব চেয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ঠিক করেন আদালত। তারই ধারাবাহিতায় এদিন সেটি শুনানির জন্য আসে।

পীরের পক্ষে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বারজজ আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর দিল্লুর রহমান ও তার দরবারের সব সম্পত্তির হিসাব চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ দরবারের পীরের অনুসারীদের বিরুদ্ধে করা (রিটে উল্লেখিত ৮টি) মামলা তদন্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে মামলার বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে সিআইডি। সেই সঙ্গে রিট আবেদনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বলেন আদালত।

এছাড়া সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তাদের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পর্ক আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়।

অপরদিকে রুলে পীর ও তার মুরিদদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চান আদালত।

হাইকোর্ট তার রুলে এ রিটের ভুক্তভোগীদের হয়রানি, অপদস্থ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফৌজদারি মামলাকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (বিশেষ শাখা), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপরাধ তদন্ত বিভাগ), ঢাকা জেলা প্রশাসক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ-মহাপরিদর্শক, গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান, রাজারবাগ পীর দিল্লুর রহমান ও হয়রানিমূলক মামলার বাদীসহ বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন। আদালতে ওই দিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

পীরের মুরিদদের দায়ের করা মামলায় হয়রানির শিকার সাত বছরের শিশু, নারী, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদরাসার শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ আট ব্যক্তির পক্ষে এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর ভুয়া মামলার সিন্ডিকেট খুঁজতে রাজারবাগ পীর ও তার মুরিদদের দেশব্যাপী দায়ের করা গায়েবি মামলার বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।