রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমান ও দুদক

৭০০০ একর জমি দখলের অভিযোগ, রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে তদন্তে দুদক

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাত হাজার একর জমি দখল ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য ইতোমধ্যে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুদক।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) তিন টিম কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও মো. আলতাফ হোসেন। তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাত হাজার একর জমি দখল ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজারবাগ পীর দিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। তার প্রেক্ষিতে দুদক তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।’

দুদক সচিব বলেন, ‘অনুসন্ধান টিমকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদনে দিতে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী তদন্ত দল তাদের কাজ শুরু করেছে। তদন্ত কর্মকর্তারা প্রয়োজন মনে করলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুদকে তলব করতে পারেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার ফাঁদে ফেলে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। তার ইন্ধনে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্তত ৮০০ ভুয়া মামলা করেছেন, যার মধ্যে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা করার তথ্যও রয়েছে। পীরের পক্ষে তার অনুগতরা এসব মামলা দায়ের করেন।

বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালে মামলাগুলো স্থগিত করে পীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান এবং তার দরবারের সব সম্পত্তির হিসাব চেয়ে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

পাশাপাশি দরবার শরিফের সব সম্পদের তথ্য খুঁজতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে নির্দেশ দেন আদালত।

এছাড়া উচ্চ আদালতে রিটকারী আটজনের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন পীর দিল্লুর রহমান।