ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজ
সংসদ অধিবেশন (ফাইল ছবি)

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ২ বিল সংসদে

জাতীয় সংসদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল, ২০২১ সহ দু’টি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। উত্থাপিত অন্য বিলটি হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিল, ২০২১।

আজ শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিল দু’টি উত্থাপন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল, ২০২১

বিদ্যমান সুপ্রিম কোর্ট জাজেজ রিম্যুনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস অধ্যাদেশ রহিত করে নতুন করে বাংলায় আইন প্রণয়নের বিধানের প্রস্তাব করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিচারকদের বেতন ও ভাতা বাড়ান হয়। প্রস্তাবিত বিলে বিচারকদের বেতন না বাড়লেও কিছু ভাতা যোগ হয়েছে সেখানে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির মাসিক বেতন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, আপিল বিভাগের বিচারপতির ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির ৯৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগের আইনেও একই ছিল।

বিলে বিচারপতিদের মূল বেতনের শতকরা ৫০ ভাগ বাড়ি ভাড়া। প্রতি ৩ বছর পর পর এক মাসের শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি এবং ১ মাসের বেতন, বছরে দু’টি উৎসব ভাতা, বছরে একবার শতকরা ২০ ভাগ নববর্ষ ভাতা, নিয়ামক ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্যের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে নতুন বিলে প্রধান বিচারপতির ‘নিয়ামক ভাতা’ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রধানবিচারপতি মাসে ১২ হাজার টাকা হারে এই ভাতা পান। নতুন আইনে তা ২৫ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে।

আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকরা আগের মতই আট হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা পাবেন।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের একজন বিচারক তাদের বাসায় একজন বাবুর্চির পরিবর্তে প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকা করে ‘কুক ভাতা’ পাবেন।

তবে বর্তমান আইনে একজন বিচারক ‘ডমেস্টিক এইড’ ভাতা পান। খসড়া আইনে সেটা রাখা হয়নি।

বিলে বলা হয়েছে, বিচারকরা তাদের তাদের ইয়ারমার্কড, স্বতন্ত্র, একক বাসা, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী পদের সুবিধার পরিবর্তে প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা সিকিউরিটি ভাতা প্রাপ্য হবেন।

সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিল, ২০২১

অন্যদিকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিলে বিচারপতিদের নির্দিষ্ট হারে ভ্রমণ ভাতা প্রদানের বিধানের প্রস্তাব করা হয়।

১৯৭৬ সালের এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত ভাতা বাড়ানোর জন্য খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।

বর্তমানে উচ্চ আদালতের একজন বিচারক সুপ্রিক কোর্ট সদরদপ্তরের বাইরে দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক চারশ টাকা করে ভাতা পান। নতুন আইনের খসড়ায় তা এক হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, কোনো বিচারক দায়িত্ব পালনে সদর দপ্তরের বাইরে থাকলে ছুটির দিনসহ দৈনিক ১৪০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন।

বিলে বলা হয়েছে, সড়ক পথে ভ্রমণের জন্য একজন বিচারক প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা ৭৫ পয়সা হারে ভাতা পাবেন। বর্তমানে এই ভাতার হার প্রতি কিলোমিটার এক টাকা।

এছাড়া রেলপথ, নৌপথ ও আকাশপথে ভ্রমণের জন্যও বিভিন্ন হারে ভাতার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য একাধিক যাত্রাপথ রয়েছে, সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত এবং স্বল্প ব্যয়ের ভ্রমণ ভাতা দাবি করতে হবে।

কোনো বিচারক ছুটিতে গেলে, ছুটি থেকে ফিরে এলে কিংবা বিদেশে ছুটি কাটিয়ে আবার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার জন্য ফিরলে, কিংবা অবসরের পর নিজের ঠিকানায় ফেরার সময় কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাও বলা হয়েছে নতুন আইনের প্রস্তাবে।

  • ট্রেনে, লঞ্চে, জাহাজে বা স্টিমারে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত’ দুই বার্থের প্রথম শ্রেণির একটি কম্পার্টমেন্ট বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের একটি ক্যুপে কম্পার্টমেন্ট বা প্রথম শ্রেণির কেবিন পাবেন।
  • আকাশ পথে ভ্রমণ করলে সেই ভাড়া পাবেন।
  • একজন বিচারক তার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার সময় ভ্রমণের জন্য স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান ছাড়াও তিনজন ব্যক্তিগত পরিচারকের জন্য সর্বনিম্ন হারে সড়ক, রেল বা স্টিমার ভাড়া পাবেন।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিল দু’টি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।