গ্রেফতার হওয়া তারেক সরকার
গ্রেফতার হওয়া তারেক সরকার

আ. লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পরিচয়ে সচিবের কাছে তদবির, সাবেক কারারক্ষী গ্রেফতার

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানকের পরিচয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে ফোন করে চাকরির সুপারিশ করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ধরা পরেছেন এক ব্যক্তি।

আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন।

গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম তারেক সরকার। তিনি সাবেক কারারক্ষী। তারেক ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার কারণে চাকুরিচ্যুত হন।

ফারুক হোসেন জানান, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পরিচয় দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেনকে ফোন করেন তারেক সরকার। তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্তার হোসেন। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগকে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন তারেক একজন প্রতারক। দীর্ঘদিন এ ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ৩টি প্রতারণার মামলা রয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানকের ফোন নম্বর ক্লোন করে সচিবকে ফোন করেন তারেক।

তিনি জানান, রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারেক জানিয়েছেন, নরসিংদীর জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সদস্য সচিব ছিল সে। নিজেকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের এপিএস পরিচয়ও দিয়েছেন। ২০০৬ সালে কারারক্ষী পদে নিয়োগ পায় এবং ২০২০ সালে একজন সংসদ সদস্যকে আইজি প্রিজন্স পরিচয়ে ফোন করার অপরাধে চাকরি যায় তার। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র ও নিয়োগ বাবদ আর্থিক লেনদেনের হিসাবসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।

ফারুক হোসেন আরও জানান, তারেকের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় ছয় মাস কারাভোগ করে পরে জামিনে মুক্ত হন।

বিএনপি নেতার পিএস পরিচয় ব্যবহার করার বিষয়ে তারেকের বক্তব্য পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে যদি পিএস পরিচয়ের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ওই বিএনপি নেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এমনকি তার কারারক্ষী পদে চাকরি নেওয়ার সময় কোনও সুপারিশ ছিল কি না সেই বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে।

তারেকের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।