কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

এজলাসে ডেকে আইনজীবীদের শুনানিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান বিচারপতির

আইনজীবীদের একাংশের গরহাজিরার জেরে মামলার শুনানি এগোচ্ছে না বলে মনে করছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাই নিজের এজলাসে ডেকে বিচারপতির আইনজীবীদের শুনানিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আজ সোমবার (১৮ এপ্রিল) বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক-সহ বেশ কয়েক জন আইনজীবীকে নিজের এজলাসে ডেকে পাঠান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই বিচারপতি বলেন, ‘‘সবাই চলে আসুন। মামলার কাজ এগোচ্ছে না। মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যাচ্ছে না।’’

আইনজীবীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘‘সাধারণ সভা ডাকুন। সিদ্ধান্ত নিন। কারও সঙ্গে তো আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।’’ এসময় আইনজীবীরা তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার প্রশাসনিক নির্দেশের কারণে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা এই সংক্রান্ত মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন।’’

তবে আইনজীবীদের এই ধারণা ঠিক নয় বলেই মনে করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এর জবাবে বলেন,‘‘ডিভিশন বেঞ্চে তো আমার থেকে অভিজ্ঞ বিচারপতিরা রয়েছেন। আমার তো মাত্র চার বছর হয়েছে। তাঁরা কেন মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন? ডিভিশন বেঞ্চের ক্ষমতা আমি জানি।’’

প্রসঙ্গত, এর আগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এলজলাস বয়কটের ডাক দিয়ে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একাংশ হাই কোর্টে বিক্ষোভ দেখান। এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়ান আইনজীবীরা। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের বাইরে ঘেরাও করে বিক্ষোভও চলে বেশ কিছু ক্ষণ।

এই সব ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মাথায় বন্দুক ধরতে পারেন। মারতে পারেন। মরতে রাজি আছি। কিন্তু দুর্নীতি দেখলে চুপ করে থাকব না। আওয়াজ তুলবই।” এই পরিস্থিতিতে আইনজীবীদের আর একটি অংশ আদালতের কাজকর্ম এবং শুনানিতে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ তুলে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দ্বারস্থ হন।

এই সব ঘটনার প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তৃণমূলের আইনজীবী সেলের এক সদস্যকে বলেন, “ক’দিন আগে বার কাউন্সিলের সভাপতি অশোক দেবের সঙ্গে আমার কথা হল। আপনাদের বলছি, রাজনীতি করবেন না। আমি তো কোনও রাজনীতি করছি না। শুধু একটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতে চেয়েছি।”

তবে এ বার নিজেই আইনজীবীদের ডেকে শুনানিতে আসার জন্য পরামর্শ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা