মামলার জট কমাতে দরকার আইনজীবীদের সহযোগিতা
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের প্যানেল আইনজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা। ছবি: ইত্তেফাক

মামলার জট কমাতে দরকার আইনজীবীদের সহযোগিতা

দেশে আদালতসমূহে থাকা মামলার জট কমাতে আইনজীবীদের সহযোগিতা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম। তিনি বলেছেন, এখন আদালতে ৩৫ লাখ মামলা আছে। এটা যেন আবার ৭০ লাখে না পৌঁছে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এজন্য আইনজীবীদের সহযোগিতা দরকার।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের অর্ধশত প্যানেল আইনজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বুধবার (১৫ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এই আহ্বান জানান।

এছাড়া দুস্থ ও গরীব বিচারপ্রার্থীদের মামলা আন্তরিকতার সঙ্গে পরিচালনা করতেও প্যানেল আইনজীবীদের অনুরোধ জানান লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, লিগ্যাল এইডের মামলাগুলোতে বিচারপ্রার্থী জনগণকে কিভাবে দ্রুত প্রতিকার পাইয়ে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা আপনাদের থাকতে হবে। কারণ এই লিগ্যাল এইড নেওয়ার জন্য যারা আসেন তারা খুবই দুস্থ। তাদের দিকটা আগে দেখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে। এ কাজে প্যানেল আইনজীবীকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ প্রধান বিচারপতির প্রত্যাশা এ ধরনের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করা যাতে দুস্থ মানুষরা বছরের পর বছর যেন আদালতের বারান্দায় না ঘোরেন।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আপনারা যখন লিগ্যাল এইডের কোন মামলার ড্রাফট করবেন তখন সেটা সুলিখিত হতে হবে। কোন বিচারক যেন বলতে না পারে ড্রাফটি দুর্বল হয়েছে। কারণ ভালো ড্রাফট হলে ভালো রায় দেওয়া সম্ভব হয়। প্রয়োজনে কোন সিনিয়র আইনজীবীর সহযোগিতা নিন। কারণ ভালো ড্রাফট করলে সকলেই আপনাদের প্রশংসা করবে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া লিগ্যাল এইডের কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সেজন্য এধরনের মামলা সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।

সভায় লিগ্যাল এইডের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে কি কি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন সেগুলো তুলে ধরেন প্যানেল আইনজীবীরা। তারা বলেন, এ ধরনের মামলার সত্যায়িত অনুলিপি পেতে বেশ কাঠ-খর পোড়াতে হয়। আবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা হতেও আশানুরূপ সহযোগিতা পাওয়া যায় না। আবার আইনজীবীদের ফি পেতে রায়ের কপি দাখিল করতে হয়। এছাড়া লিগ্যাল এইডের মামলার ফাইলগুলো পৃথকভাবে রাখা যায় কিনা সে প্রস্তাবও করেন কেউ কেউ।

এই সমস্যা সমাধানে সকল চেষ্টা থাকবে বলে জানান লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমি যতদিন পর্যন্ত দায়িত্বে রয়েছি চেষ্টা থাকবে সমস্যা সমাধানের। তবে যা কিছুই করা হবে না কেন তা আইন মেনেই করতে হবে।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সবাই মিলে দুর্নীতি দূর করার চেষ্টা করতে হবে। হয়তো আরও ৫০ বছর লাগবে। আপনি যদি ভালো ও সৎ থাকেন দেশটাও ভালো থাকবে। ভালো লোক আছে বলেই বাংলাদেশটাও বেঁচে আছে।

এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আব্দুন নুর দুলাল, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা জজ ফারাহ মামুন, কো- অর্ডিনেটর রিপন পোল স্কু ছাড়াও আইনজীবীদের মধ্যে এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান, ওমর ফারুক, রিমি নাহরীন, রেজাউল ইসলাম, মনিরুজ্জামান রুবেল, কুমার দেবুল দে, বদরুন নাহার, প্রজ্ঞা পারমিতা প্রমুখ তাদের মতামত সভায় তুলে ধরেন।

সূত্র: ইত্তেফাক