আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ফাইল ছবি)

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রদান ও শপথ পড়াতে পারবেন: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রধান বিচারপতি- ‘বিচারপতি নিয়োগ ও শপথ’ পড়াতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯১ সালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান বিচারপতি নিয়োগও দিয়েছেন, শপথও পড়িয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচারকদের প্রশিক্ষণ কোর্সের একটি অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করার কোনো দরকার নাই, তার কারণ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই এ পদটি বেশিদিন খালি রাখবেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিকদের) কথা- বিচারপতিদের শপথ পড়াবেন প্রধান বিচারপতি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া যাবে না- মর্মে আমাদের সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির কথা বলা আছে; যিনি আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারপতি হবেন, তিনি অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি হবেন।’

‘‘সেখানে কিন্তু পরিষ্কারভাবে বাংলায় এ কথা বলা আছে ‘অনুরূপ’। প্রধান বিচারপতির অনুরূপ ক্ষমতা প্রয়োগের কথা বলা আছে। অনুরূপ মানে হচ্ছে-প্রধান বিচারপতি যা করতে পারতেন তিনিও তা করবেন।’’

তিনি বলেন, ‘একটু পেছনে তাকালে দেখা যাবে, ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ কেয়ারটেকারের চিফ অ্যাভাইজর হয়েছিলেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন। তখন একজন অ্যাক্টিং চিফ জাস্টিস ছিলেন। তিনি অ্যাপয়েনমেন্টও দিয়েছেন। শপথও পড়িয়েছেন। এটা যে নজির নাই তা না। নজির আছে। অনুরূপ কথার উপরে জোর দিতে হবে।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যিনি এখন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি তিনি কিন্তু একটা শপথ নিয়েছেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে। অনুরূপ মানে হচ্ছে- চিফ জাস্টিসের সকল ক্ষমতা তিনি পালন করতে পারবেন। সেখানে কিন্তু কোনো বিভাজন করে দেওয়া হয় নাই। তিনি কি করতে পারবেন কি পারবেন না।’

সংবিধানের ৯৭ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তাঁহার দায়িত্বপালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমতো অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন।’

অবকাশকালীন ছুটি শেষে সুপ্রিম কোর্ট খোলার আগের দিন অর্থাৎ গত ২ অক্টোবর অসুস্থতার কথা জানিয়ে একমাসের (০৩ অক্টোবর থেকে ০১ নভেম্বর) ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

পরে বিদেশে যেতে আরও দশদিনের (০২ থেকে ১০ নভেম্বর) ছুটি বাড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া থেকে কানাডা যাওয়ার পথে ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর তার পদত্যাগপত্র জমা দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রাবিরতিকালে ১০ নভেম্বর হাইকমিশনে পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তবে পদত্যাগ পত্রে তিনি কি লিখেছেন তা জানা যায়নি।

পরের দিন ১১ নভেম্বর (শনিবার) দুপুরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছানোর কথা জানান।

নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম