আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

মানবতাবিরোধী অপরাধে খুলনার ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে খুলনার বটিয়াঘাটার ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

দণ্ডিত আসামিরা হলেন- বটিয়াঘাটা উপজেলার আমজাদ হোসেন হাওলাদার, সহর আলী সরদার, আতিয়ার রহমান, মোতাছিম বিল্লাহ, কামাল উদ্দিন গোলদার এবং মো.নজরুল ইসলাম। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক।

এদিন সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ২০৩ পৃষ্ঠার এ রায় পড়া শুরু হয়। আদালতে রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। রায়ের প্রথম অংশ পাঠ করেন বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। দ্বিতীয় অংশ পাঠ করেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।

রায় ঘোষণাকালে আদালত বলেন, কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধীর বর্তমান বয়স বিবেচনায় বিচার হচ্ছে না; বিচার হচ্ছে ৭১ সালে তারা যেসব অপরাধ করেছেন সে অপরাধের বিবেচনায়। আজকে যাদের দেখছেন বয়স ৮০ বছরের উপরে, তখন তাদের বয়স ছিল ৩০ বছর।

এ মামলায় আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিলেন এসব আসামি। তাদের বিরুদ্ধে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার চারটি অভিযোগ আনা হয়।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে আসামি আসামি মোজাহার আলী শেখ মারা যায়।

প্রসিকিউশনের ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের জেরার পর উভয় পক্ষের যুক্ততর্ক উপস্থাপনের শেষে গত ২২ মে মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রাখেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২৬ জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুরে এ মামলায় রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করা হয়।

দণ্ডিত আসামি আমজাদ কনভেনশন মুসলিম লীগের কর্মী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। আসামি মো. মোতাসিন বিল্লাহ জামায়াতে ইসলামির অনুসারী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বাকি আসামিরাও রাজকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।