ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে গৃহকর (হোল্ডিং) ট্যাক্স বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব এমপি-মন্ত্রীরা। নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত সরকারের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা। বৃহস্পতিবার রাতে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা। একই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। এসময় সভাপতির চেয়ারে থাকা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াও আলোচনার সাথে সহমত প্রকাশ করে এবিষয়ে নোটিশ দিতে বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ট্যাক্স বৃদ্ধি নিয়ে যে কথাটা উঠেছে তা সঠিক। নিজে টিভিতে দেখেছি বেশ কিছু লোক এই সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ট্যাক্স বাড়বে এটা অস্বাভাবিক কিছু না, সব কিছুই দিন দিন বাড়ে। সম্ভবত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে ট্যাক্স বাড়ান না। কিন্তু সেইটা যদি এক সাথে বাড়ানো হয় সেটা মানুষ গ্রহণ করবে না।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি, আমরা জনগণের কথা বলি, জনগণের সুখ-দু:খের ভাগি আমরা। হঠাৎ যার ট্যাক্স ছিল ৮ হাজার টাকা তার যদি এখন ৭২ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয় তাহলে প্রতিক্রিয়া তো হবেই। আমার নিজেরও একটা বাড়ি আছে বনানীতে। এইটা মনে হয় পুন:বিবেচনার করা প্রয়োজন। এসময় তিনি প্রশ্ন উত্থাপনকারী সদস্যের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি যদি নোটিশ দেন তাহলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিবেচনা করতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি, রাজনীতিতে কতগুলো সময় থাকে যে জিনিসটি আপনি ৩-৪ বছর আগে করতে পারতেন সেই জিনিসটি একটা সরকারের শেষ সময়ে এসে করলে তার একটা প্রতিক্রিয়া হতে বাধ্য। এর একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তাই এটির সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।
আবু হোসেন বাবলা বলেন, ঢাকা শহরে হোল্ডিং ট্যাক্সের ব্যাপারে দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ অত্যন্ত অসহায়ের মধ্যে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে এমনিই মানুষ দিশেহারা তার মধ্যে এই হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো যৌক্তিক নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও মেয়ররা হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ান সেটা কাউন্সিলরদের জবাব দিতে হয়। নির্বাচনের বাকী আর মাত্র একটি বছর। বাস্তবে আর আছেই ৬-৭ মাস। এতে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হবে। অনতিবিলম্বে হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এটা যদি এক বছর আগে করত, দুই বছর আগে করত সমস্যা ছিল না। এখন তো সময় সন্নিকটে, মোবাইল সিস্টেমে প্রিপেইড করেছে। তবে এটা এখন কেন নির্বাচনের পরে করেন। তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই মধ্যবিত্ত মানুষ এই ট্যাক্স দিতে পারে না। অনেকগুণ বাড়ানো হয়েছে। নোটিশ দিয়েছে। আমার জানামতে অনেক গুণ, চার ডাবল, ছয় ডাবল বৃদ্ধি করেছে। ঢাকার মেয়র খোকাও কিন্তু ট্যাক্স বৃদ্ধি করেনি। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামেও একইভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এটা সরকারের জন্য ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হবে। তাই সিদ্ধান্তটি পুন:বিবেচনার আহ্বান করছি। এরআগে জাতীয় পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন।