আসামিদের আটকের পর আইন লঙ্ঘন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্ট) মাধ্যমে সাজা দেওয়ার ব্যাপারে থানা পুলিশকে সতর্ক করে আদেশ জারি করেছে চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লুৎফর রহমান শিশির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে গত ১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) এ সকর্তকতা জারি করা হয়।
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশপত্রে উল্লেখ করা হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলার সব থানার ওসি আইন লঙ্ঘন করে তাদের দ্বারা আটক আসামিদের নিয়মিত আদালতে সোপর্দ না করে সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের (ইউএনও এবং এসিল্যান্ড) কাছে উপস্থাপন করছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণও মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯-এর সুস্পষ্ট বিধান লঙ্ঘন করে ওই আসামিদের আইন বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিচ্ছেন। যা দেশের সংবিধান এবং প্রচলিত অন্যান্য আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পরবর্তীতে পুলিশ কর্তৃক আটক আসামিদের ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহায়তা করার কোনো সংবাদ গোচরীভূত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের কারণে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সুপ্রীম কোর্টকে অবহিত করা হবে বলে জেলার সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয় ওই চিঠিতে।
প্রসঙ্গত, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর ৬ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘এ আইনের অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় তফসিলে বর্ণিত আইনের অধীনে কোনো অপরাধ, যা কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য, তার সম্মুখে সংঘটিত বা উদঘাটিত হয়ে থাকলে তিনি ওই অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই আমলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে, দোষী সাব্যস্ত করে এ আইনের নির্ধারিত দণ্ড আরোপ করতে পারবেন।’
কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় থানা পুলিশ কর্তৃক ধৃত আসামিদের যে নিয়মে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তা আইনের বিধান লঙ্ঘন। বিষয়টি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অফিস আদেশের ওই চিঠি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার ও সব থানার ওসি বরাবর পাঠানো হয়েছে।