বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে নারী

দেশে প্রতি ঘণ্টায় নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। আর এসব ঘটনা ঘটছে জনসম্মুখে।
আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘ল অন সেক্সচ্যুয়াল হ্যারাজমেন্ট ইন পাবলিক প্লেস’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড।
ফারাহ কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায়, প্রতিদিন পাবলিক প্লেসে হরদম নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কখনও বাসে, কখনও মার্কেটে প্রতিনিয়ত এসব যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এ কারণে নারীরা গুটিয়ে যায়, পাবলিক প্লেসে যেতে চায় না। তারা চলাফেরায় স্বাধীনতা বোধ করে না। এর ফলে অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে’।
তিনি বলেন, গণ পরিসরে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও অন্যান্য সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশে বেশ কিছু আইন রয়েছে। তবে আইনগুলোতে বেশকিছু বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। আইন প্রক্রিয়ায় হয়রানিমূলক বৈশিষ্ট্যের কারণে বেশির ভাগ নারী আইনি সহায়তা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। এরপরও যে আইনগুলো রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে কিছু সমস্যা সমাধান হবে।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিভিন্ন আইন রয়েছে কিন্তু আইনগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় এবং আইনের প্রয়োগের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এ কারণে প্রয়োজন অনুসারে আইনের পরিবর্তন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা দরকার বলেও মত দেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তসলিমা ইয়ামীন বলেন, বাংলাদেশের আইনে যৌন হয়রানির কোনো ডেফিনেশন (সংজ্ঞা) নেই। এ কারণে যৌন হয়রানির মতো অপরাধ করেও বারবার অপরাধী পার পেয়ে যায়। যৌন হয়রানির ডেফিনেশন দিতে হবে, এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।
এসময় যৌন হয়রানির বিষয়ে সহিষ্ণুতা নীতি কমাতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সভায় অন্য বক্তরা বলেন, যৌন হয়রানি বন্ধে মূল্যবোধ পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে হবে। এছাড়া বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার। একইসঙ্গে যৌন হয়রানির সংজ্ঞা নির্ধারণ করে নতুন আইন তৈরিরও তাগিদ দেন তারা।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আইনবিদ, নারী বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম