বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি ১২ আগস্ট

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ শুনানির জন্য আগামী ১২ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রোববার (১৫ জুলাই) আসামিপক্ষে চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করলে ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ নাজমুল আলম আবেদন মঞ্জুর করে চার্জ শুনানির জন্য এ দিন ঠিক করেন।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ১৩ জন। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধে রায়ে জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়। সাবেক কৃষি মন্ত্রী এমকে আনোয়ার মারা গেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়া, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মুঈনুল আহসান, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশারফ হোসেন ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার মো. আমিনুল হক।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম।
ওই বছরের ৫ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাসেম ফকির খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মো. সাইফুর রহমান, বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভুঁইয়া ও পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এসআর ওসমানী মারা যাওয়ায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র করলে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।
দরপত্রগুলো কারিগরি ও আর্থিকভাবে যাচাইয়ের জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
শ্যান্ডং লুদি কনসোর্টিয়ামকে প্রথম, সুজু কোল মাইনিং গ্রুপ কনসোর্টিয়ামকে দ্বিতীয় ও সিএমসি কনসোর্টিয়ামকে তৃতীয় করে কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
শ্যান্ডং লুদি কনসোর্টিয়াম চুক্তি বাস্তবায়ন না করায় সিএমসিকে একই মূল্যে ও শর্তে কাজটি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সিএমসি একই মূল্যে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় সময় স্বল্পতার অজুহাত দেখিয়ে আসামিরা পুনঃদরপত্র আহ্বান না করে সিএমসি’র দাখিল করা মূল্যে ও শর্তে তাদের কার্যাদেশ প্রদান করেন।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, পুনঃদরপত্র আহ্বান না করে সিএমসি’র দাখিল করা মূ্ল্যে ও শর্তে তাদের কাজ দেওয়ায় সরকারের ১৫৮ কোটি, ৭১ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৩ টাকা ক্ষতি হয় এবং আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে তা আত্মসাৎ করেন।
ঘটনার সময় খালেদা জিয়া জ্বালনি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। তাকে জানিয়েই পুনঃদরপত্র ছাড়ায় সিএমসিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় মর্মে মামলায় উল্লেখ করা হয়।