বিচারপতিকে সরিয়ে সচিবের জন্য কামরা বরাদ্দ, বিপাকে কিশোরগঞ্জের ডিসি

হাইকোর্টের বিচারপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউজ থেকে সরিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে বরাদ্দ দিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলা প্রশাসক ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি)। এ ঘটনায় জারি করা আদালত অবমাননার রুলের পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ নভেম্বর। ওই দিন শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে আদেশের জন্যও তারিখ নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) হাইকোর্ট বিচারপতি বোরহানউদ্দিন ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন আদেশ দেন।
তিন সরকারি কর্মকর্তার পক্ষে আদালতে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও ব্যারিস্টার মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগে থেকে না জানিয়েই গত ৩০ অক্টোবর বিচারপতি বোরহানউদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউজ থেকে সরিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে বরাদ্দ দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই কর্মকর্তা, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুলের বিষয়ে শুনানি আগামী ১৬ নভেম্বর। ওই দিন শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য ধার্য করেন হাইকোর্ট।
অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক আরও জানান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন পরিবারসহ এক সফরে গত ২৯ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের ইটনায় যান। তিনি কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউজে ওঠেন। সেখানে তাদেরকে সার্কিট হাউজের ১ ও ২ নম্বর রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে তাদের সার্কিট হাউজ ছেড়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই তার জন্য বরাদ্দ দেয়া একটি কক্ষ খালি করে সেখানে অতিরিক্ত সচিব শেখ রফিকুল ইসলামকে বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ কারণে বিচারপতির জিনিসপত্র সরিয়ে অন্য কক্ষে রাখা হয়। এ সময় বিচারপতি ও তার পরিবারের কেউই সেখানে ছিলেন না। তারা কক্ষে ফিরে দেখেন একটিতে তাদের মালামাল নেই। সেখানে অন্য এক ব্যক্তি (সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী) অবস্থান করছেন।
এ অবস্থায় বিচারপতি ঢাকায় ফিরে ১ নভেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী এবং এনডিসি মাহমুদুল হাসানকে তলব করেন। তাদের ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
একইসঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে কেন সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী, শেখ রফিকুল ইসলাম এবং মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়।
এ নির্দেশে ডিসি সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) মাহমুদুল হাসান বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তবে আদালত অবমাননার রুলের আদেশের জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।