তাজরীন ট্র্যাজেডির ৮ বছর: দুর্ঘটনায় হতাহতের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিতের দাবি

প্রতিবেদক : ল'ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)

তাজরীন ফ্যাশনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের আট বছর পূর্তি হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। ২০১২ সালের এই দিনে অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় সকল নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা জানাতে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আয়োজনে মঙ্গলবার জুরাইন কবরস্থানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, ১ মিনিট নীরবতা পালন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এ সময় মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)- এর প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি ব্লাস্ট এর পক্ষ হতে বিভিন্ন জেলা সমূহে নিজ নিজ জেলা কার্যালয়ের সম্মুখে মানব বন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্লাস্টের অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশনস এর ডেপুটি ডিরেক্টর মাহবুবা আক্তার।

তিনি জানান, কর্মসূচীতে ব্লাস্টের পক্ষ থেকে নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকের প্রতি হয়রানীমূলক আচরণ বন্ধসহ সকল শ্রমিকের প্রতি বৈষম্য নিরসন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।

মাহবুবা আক্তার বলেন, দিনটি উপলক্ষে ব্লাস্টের উদ্যোগে গাজীপুর ও চট্টগ্রামে শ্রমিকদের আইনগত সহায়তা প্রদান ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনলাইন লিগ্যাল এইড ক্যাম্পেরও আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে সংঘটিত তাজরীনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে, অনেককেই বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্ব জীবন এবং এ সকল বিষয়ে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা হলেও অদ্যাবধি তা নিষ্পত্তি হয়নি।

বাংলাদেশের বিদ্যমান শ্রম আইনে ক্ষতিপূরণের জন্য যে পরিমাণ অর্থের উল্লেখ আছে তা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে ও বাস্তবতার নিরিখে আদৌ যথাযথ নয়। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার প্রায় ০৮ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের ন্যূনতম কোন মানদন্ড নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দ্রুত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের স্বার্থে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রসমূহ সুনির্দিষ্ট করা অতি জরুরী।

ক্ষতিপূরণের যথাযথ পরিমাণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় থাকা অত্যাবশ্যক তা হলো নিহত ও স্থায়ীভাবে সম্পূর্ণ আহত শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কর্ম সক্ষমতা বা অবসর গ্রহণ করা পর্যন্তু তার আয়ের পরিমাণ; অবসর গ্রহণকালে প্রাপ্য গ্রাচুইটি বা আইনানুগ পাওনাদি; তার পোষ্য বা পোষ্যদের জীবন- জীবিকার জন্য অনুমিত খরচ; সম্পূর্ণ অক্ষম শ্রমিকের চিকিৎসা বাবদ অনুমিত খরচ ও তার জীবন- জীবিকার জন্য অনুমিত খরচ এবং তাদের পোষ্যদের মধ্যে কমপক্ষে একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এছাড়া দূর্ঘটনায় অস্থায়ী অক্ষম শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার চিকিৎসা বাবদ অনুমিত খরচ; অক্ষমতার মেয়াদকাল পর্যন্তু মাসিক মজুরী ও আনুসঙ্গিক সুবিধাদি এবং সক্ষমতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের বিষয়গুলোও বিবেচ্য।