নিয়োগ স্থগিত হওয়া সহকারী জজের মামলায় কারাগারে নারী আইনজীবী

সহকারী জজ হিসেবে গেজেটের পর নিয়োগ স্থগিত হওয়া শাহ পরানের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আইনজীবী মনজিলা সুলতানাসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী এই আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অপর দুই আসামি হলেন—আইনজীবী মনজিলার দুই সহযোগী কাজী তাহমিনা সুলতানা বাবলী এবং তানজিলা সুলতানা।
তবে মামলার অপর আসামি মনজিলার স্বামী বিজয় শাকিলের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
মামলার বাদী নিজেও ঢাকা আইনজীবী সমিতির একজন সদস্য।
জানা গেছে, ফেসবুক আইডিতে বাদী সম্পর্কে আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে শাহ পরান কোতয়ালী থানায় এই মামলা করেন। মনজিলার স্বামী বিজয় শাকিল ও অপর দুই আসামি ওই ফেসবুক পোস্টে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তাই চারজনকে আসামি করে রাজধানীর কোতয়ালী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন তিনি।
মামলা দায়েরের পর আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করলে তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক আসামিরা বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।
আদালতে আসামিপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান ও শাহরিয়ার কবির বিপ্লব শুনানি করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, মামলার বাদী শাহ পরানের বিরুদ্ধে আসামি মনজিলা সুলতানা চট্টগ্রাম লোহাগড়া থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে ইতিপূর্বে মামলা করেছেন। এই মামলার পাল্টা মামলা হিসাবে বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকায় এই মিথ্যা মামলা করেছেন।
বাদীপক্ষে সাইদুর রহমান মানিক, আনোয়ারুল কবীর বাবুল, তাপস চন্দ্র দাস প্রমুখ আইনজীবী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, চট্টগ্রামের মামলাটি অসত্য ও বাস্তবতা বিবর্জিত ঘটনায় সাজানো হয়েছে। শাহ পরান আইনজীবী মনজিলা সুলতানার শ্লীলতাহানি করেননি।
শুনানি শেষে বিচারক আসামীদের মধ্যে বিজয় শাকিলের জামিন মঞ্জুর করলেও মনজিলা সুলতানা, কাজী তাহমিনা সুলতানা বাবলী ও তানজিলা সুলতানাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, এই মামলার বাদীর বিরুদ্ধে আসামি আইনজীবী মনজিলা সুলতানার শ্লীলতাহানির অভিযোগে চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। সেই মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সহকারী জজ হিসেবে তার যোগদান প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।