নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া ব্যাখ্যার এক কপি আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার। এ সময় শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির; তার সঙ্গে ছিলেন ব্লাস্টের পক্ষে আদালতে যুক্ত হওয়া আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ব্যাখ্যা চেয়েছেন। সেই ব্যাখ্যা হাইকোর্টে দাখিল করার নির্দেশনা চেয়েছিলাম। তখন আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) বাল্যবিয়ের অভিযোগে নেত্রকোনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজায় কারাগারে যাওয়া দুই শিশু মুক্তি পায়। আইনজীবীর চিঠি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট শিশু দুটিকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
দুই শিশুকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর খবর যুক্ত করে তাদের মুক্তি চেয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ বরাবর ই-মেইলে একটি চিঠি (পত্র) পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এরপর এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।
পরে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, দুই শিশুর সাজার খবরটি হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চের নজরে আনা হলে আদালত ওই দুই শিশুর মুক্তির বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে আমাকে তা নেত্রকোনার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) অবহিত করতে বলেন।
তিনি বলেন, আমি নেত্রকোনার ডিসিকে আদালতের আদেশটি টেলিফোনে অবগত করি। তখন তিনি (ডিসি) জানান ইতোমধ্যেই হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার আগেই শিশুদের আপিল শুনানি করে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এই দুই শিশুকে নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের দণ্ডাদেশ দিয়েছেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া। গত রোববার (১ আগস্ট) রাতে আটপাড়ায় সুলতানা রাজিয়া তার নিজ কার্যালয়ে এই দণ্ডাদেশ দেন। একইসঙ্গে শিশু দুটিকে গাজীপুরে অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক-বালিকা) পাঠানোর নির্দেশ দেন। শিশু দুটি মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলা কারাগারে ছিল।’
আরও পড়ুন- ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত দুই শিশু মুক্ত; মুক্তি দিতে বিচারপতিকে আইনজীবীর চিঠি…