সাইদুল ইসলাম : মামলা মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য আদালতকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কোর্ট ফি দিতে হয়। এই ফি আইনজীবী ফিয়ের বাইরে মামলা দায়েরের খরচ। মামলা দায়েরের খরচ নির্ধারণ করা হয় কোর্ট ফিস অ্যাক্ট, ১৮৭০ (সংশোধনী ২০১০), এবং ২১ সেপ্টেম্বর ২০১০-এর এসআরও নাম্বার ৩২৬-আইন/২০১০ অনুযায়ী।
কোর্ট ফি সরকারের আয়ের একটি উৎস, সাধারণত প্রতিবছর সরকার তার বার্ষিক অর্থ পরিকল্পনায় কত হারে কোন বিষয়ে কেমন কোর্ট ফি নেয়া হবে তা নির্ধারণ করে। কোর্ট ফি দুই ধরনের- ১. মূল্যমান অনুসারে কোর্ট ফি, ২. নির্ধারিত কোর্ট ফি।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে মোকদ্দমার মূল্যমানের ওপর বা দাবির মূল্যমানের ওপর ভিত্তি করে কোর্ট ফি নির্ণয় করা হয়ে থাকে। আবার কখনো কখনো মোকদ্দমার মূল্যমানের ওপর কোর্ট ফি নির্ভর করে না, বরং একটি ফি নির্দিষ্ট করা থাকে। কোর্ট ফি সাধারণত নেয়া হয় স্ট্যাম্পের মাধ্যমে। তবে যেখানে স্ট্যাম্প না পাওয়া যায় সেখানে নগদ বা রশিদের মাধ্যমেও কোর্ট ফি পরিশোধ করা যায়।
একেক পদ্ধতিতে কোর্ট ফির মূল্য নির্ধারণ করা হয় তার আগে বিষয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কীভাবে করা হয় নিচে তা সংক্ষেপে দেয়া হলো।
কোর্ট ফি নির্ধারণের সাধারণ পদ্ধতি : কোনো মোকদ্দমার মূল্যমানের ওপর বা দাবির মূল্যমানের ওপর কোর্ট ফি নির্ণয় করা হয়ে থাকে। তায়দাদের ওপর ২% এবং উক্ত ২% এর ওপর ১৫% ভ্যাট- এভাবেই কোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ মোট (২% + ২% এর ১৫%= কোর্ট ফি)
মানি স্যুট বা অর্থঋণ মোকদ্দমার কোর্ট ফি নির্ধারণ পদ্ধতি : মানি স্যুট বা অর্থঋণ মোকদ্দমার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন কোর্ট ফি হলো ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ কোর্ট ফি হবে ৫০,০০০ টাকা।
দেওয়ানি মোকদ্দমা : দেওয়ানি মোকদ্দমার সর্বনিম্ন কোর্ট ফি হবে ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ কোর্ট ফি হবে ৪০,০০০ টাকা।
সাকসেশন মোকদ্দমা : সাকসেশন উত্তরাধিকার মোকদ্দমায় ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ফ্রি। পরবর্তী ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ১% এবং পরবর্তী ১৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত্ম ২%। যেমন : কোনো মোকদ্দমার তায়দাদ ধরি ১৫,০০,০০০ টাকা। এর কোর্ট ফি হবে ১৫,০০,০০০ টাকার ২%=৩০,০০০ টাকা ৩০,০০০ টাকার ১৫%= ৪,৫০০ টাকা। মোট কোর্ট ফি লাগবে ৩০,০০০+৪,৫০০=৩৪,৫০০ টাকা।