লক্ষ্মীপুরের সেই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের সঙ্গে হাতাহাতির পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় আলোচিত এ কর্মকর্তাকে গতকাল মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে ওএসডি করার আদেশ দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দেওয়ান মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশে অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে দুপুরে হাইকোর্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মুরশিদুল ইসলাম ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামানকে তলব করেন।
আগামী ১৩ ডিসেম্বর তাদের স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার এ আদেশ দেন বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজি ও আশফাকুর রহমানের করা একটি রিটের শুনানি শেষে দেওয়া আদেশে ওইদিন ডা. সালাউদ্দিন শরীফকেও আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সালাউদ্দিন শরীফকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেওয়া সাজা কেন বাতিল করা হবেনা সে মর্মে কারণ দর্শাতে বলেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার লক্ষ্মীপুর ডিসি কলোনির ভেতরে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কাকলি শিশু অঙ্গন বিদ্যালয়ে প্রবেশকে কেন্দ্র করে সালাহ উদ্দিন শরীফ ও এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়।
এরপর ইউএনও নূরুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সালাহ উদ্দিন শরীফকে ‘অসদাচরণের দায়ে’ তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এদিকে, ভ্রাম্যামাণ আদালতে তিনি মাসের সাজার আদেশের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে জামিন ও কারামুক্ত হলেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন শরীফ।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারক মীর শওকত হোসেন ৫ হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে কারাগার থেকে স্থানীয় চিকিৎসকরা তাকে নিয়ে আসেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। আদালতের আদেশ কারাগারে পৌঁছালে ডা. সালাউদ্দিন শরীফকে লক্ষ্মীপুর কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, সোমবার জেলা প্রশাসন পরিচালিত শহরের কাকলি স্কুলের প্রবেশ পথে আগে-পরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফের বড় ছেলে মিনহাজের সঙ্গে বাক বিতণ্ডা হয়। এসময় ডা. সালাহ উদ্দিন এগিয়ে এসে পরিচয় জানতে চান। কিন্তু এডিসি পরিচয় না দিয়ে তার সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে বাবা ছেলে ও এডিসির মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
পরে পুলিশ ডেকে ডাক্তারকে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় ডাক্তারকে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম