নারায়ণগঞ্জ কারাগারে মিনি গার্মেন্ট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ মিনি গার্মেন্টে তিন থেকে চারশ বন্দী অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবেন। এ অর্থ তারা বাড়িতে পাঠাতে পারবেন নতুবা জেল থেকে বের হওয়ার সময় এককালীন নিয়ে যেতে পারবেন। কর্তৃপক্ষের আশা বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই মিনি গার্মেন্টটি চালু করা সম্ভব হবে। নারায়ণগঞ্জের কারাগারে ইতিমধ্যে জামদানি তৈরির কাজ চলছে। মিনি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠার পর জামদানি ও গার্মেন্ট পণ্য বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের অভ্যন্তরে পাঁচ হাজার বর্গফুটের মিনি গার্মেন্টটি কারা অধিদফতর, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। এতে ৫৭টি মেশিন স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে জামদানি তৈরির ছয়টি তাঁতে ১২ জন বন্দী কাজ করছেন। আরও চারটি জামদানি তাঁত বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কারাগারে বিছানার চাদর তৈরিতে কাজ করছেন ২০ থেকে ২৫ জন বন্দী।
এ ছাড়া অ্যামব্র্রয়ডারি, নকশিকাঁথা, ব্লক বাটিক, মোম, নানা ধরনের শোপিস, নারীদের পার্টস, শপিংব্যাগসহ নানা ধরনের কারুপণ্য তৈরি করছে কারাবন্দীরা। দেশের বিভিন্ন কারাগারে হস্তশিল্পসহ অন্যান্য প্রকল্প চালু হলেও বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম বন্দীদের কর্মজীবীতে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে মিনি গার্মেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। বন্দীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থ আয়ের যে উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জ কারাকর্তৃপক্ষ নিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার। এর ফলে বন্দীদের কারাজীবন অনেকখানিই সহজ হয়ে উঠবে। বন্দী অবস্থায় সময় কাটানো কঠিন হয়ে পড়ে, জীবনকে মনে হয় দুর্বিষহ। অলস মস্তিষ্ক অনেক সময় সংশোধিত হওয়ার বদলে ছাড়া পাওয়ার পর আরও বেশি অপরাধে জড়িত হওয়ার ব্যাপারেও ইন্ধন জোগায়। কারাগারে বন্দীদের কর্মজীবীতে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া তাতে বাদ সাধবে। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বন্দীদের রূপান্তরিত মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করবে। আমাদের মতে, শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় দেশের সব কারাগারেই বন্দীদের কর্মজীবী হিসেবে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। এর ফলে অপরাধীদের বদলে দেওয়ার সাফল্যই অর্জিত হবে।