বিচার বিভাগকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনার নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত বছর বিচারবিভাগীয় তথ্য বাতায়ন খোলা হয়েছে, যা পরীক্ষামূলক চলছে। এবার দেশের সব বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাকে ল্যাপটপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এরই মধ্যে এ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিচারবিভাগীয় সম্মেলনে ঢাকার জেলা জজ এস এম কুদ্দুস জামানের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিয়ে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
এখন সারাদেশের এক হাজার পাঁচশ বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তার হাতেই তুলে দেয়া হবে ল্যাপটপ। এই কাজ আগামী বছরের জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে বলে জানা গেছে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ল্যাপটপ বিতরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি আগামী জানুয়ারির মধ্যেই সব বিচারকের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেয়া যাবে।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নের ছোয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবখানেই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। যার বার্তা বিচার বিভাগেও প্রতিফলিত হচ্ছে। বিচারকদের অনেক কাজই এখন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ নেই। তাই কাজের সুবিধার্থেই সব বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে ল্যাপটপ দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত এপ্রিলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি পরে সুপ্রিম কোর্টের বাজেটেও উল্লেখ করা হয়। আর এ বছরের নতুন বাজেট পাওয়ার পরই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, আগে চিঠি ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে ছুটি নিলেও এখন অনলাইনের মাধ্যমে তা করতে হচ্ছে ২১ জেলার জেলা জজদের। পর্যায়ক্রমে এর আওতায় আসবে সব বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাই। নিম্ন আদালতের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের ভোগান্তি কমাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এছাড়া উচ্চ আদালতের পাশাপাশি কয়েকটি জেলা আদালতেও চালু করা হয়েছে অনলাইন কার্যতালিকা। কয়েকটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাক্ষ্যগ্রহণও, যা পর্যায়ক্রমে সারাদেশেই চালু করার কথা রয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালে চালু করা হয় বিচারবিভাগীয় তথ্য বাতায়ন। যেখানে বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট ৬৪ জেলার যাবতীয় তথ্য রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের যৌথ অংশগ্রহণে বাস্তবায়িত হচ্ছে জুডিসিয়াল এ পোর্টাল।
তবে ৬৪ জেলার জজ আদালতগুলোয় বাতায়নের জেলা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র রাখা হবে। যেখান তারা প্রতিনিয়ত তথ্য হাল-নাগাদ করতে পারবেন। এই বাতায়ন এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, পরীক্ষামূলক চলছে।
বিচারবিভাগীয় তথ্য বাতায়নে জেলার সব আদালত, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য, সংশ্লিষ্ট অফিসের ফোন নম্বর, জেলার কারাগার সম্পর্কিত তথ্য, জেলার মানবাধিকার সংস্থার তথ্য, জেলার লিগ্যাল এইডের তথ্য, মামলা দায়েরের পদ্ধতি, কোন মামলায় কোর্ট ফি কত, আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রম, মামলার পরিসংখ্যান, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের বদলিসহ যাবতীয় তথ্য থাকবে।
তাই সব মিলিয়ে বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের ল্যাপটপ থাকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সুপ্রিম কোর্ট।
-জাগোনিউজ