মালিকপক্ষের আপত্তির মুখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির করা একটি উপকমিটি বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছিল। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকপক্ষের সঙ্গে আরও আলোচনা করে সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে।
জাতীয় সংসদ ভবনে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গতকাল মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপকমিটির সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকপক্ষের একটি প্রতিনিধিদলও উপস্থিত ছিল।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ সংশোধন করতে ২০১৫ সালের অক্টোবরে একটি উপকমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত ৮ অক্টোবর উপকমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করে মূল কমিটিতে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মনোনীত প্রতিনিধি রাখা, শিক্ষার্থীদের ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়া, প্রয়োজনে পরিচালনা পরিষদে পর্যবেক্ষক নিয়োগসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির শর্তে কিছু নতুন বিষয় যোগ করার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে মালিকপক্ষ প্রস্তাবিত প্রায় সব সুপারিশের বিষয়ে প্রবল আপত্তি জানায়। তাঁদের আপত্তির মূল সুর ছিল, তাঁরা শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করবেন আর সেখানে প্রতিনিধিত্ব থাকবে অন্যদের, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারি অর্থে পরিচালিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন স্তরেও সরকার বা ইউজিসির প্রতিনিধি নেই বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। মালিকপক্ষের আপত্তি সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে জোরালোভাবে খণ্ডন করা হয়নি।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। এটা নিয়ে আরও আলোচনা ও সমন্বয় করে কোন কোন ক্ষেত্রে সংশোধন দরকার, তা ঠিক করা হবে।
বৈঠকের কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, গত ৮ অক্টোবর এই সুপারিশগুলো স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপনের পর ওই দিন ইউজিসির চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান বজায় রাখা এবং তাদের সামগ্রিক কার্যক্রমগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আইনের সংশোধন জরুরি।
বৈঠকে উপস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, উপকমিটির সুপারিশগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেছেন। যেমন তাঁরা বলেছেন, অর্থ কমিটি এখন যেভাবে আছে, সেভাবে রাখতে হবে। জমি বন্দক রেখে ঋণ নেওয়ার মতো কিছু বিষয়েও তাঁরা প্রস্তাব করেছেন।
কমিটির সভাপতি মো. আফছারুল আমীনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাছান মাহমুদ, গোলাম মোস্তফা, এস এম আবুল কালাম আজাদ, মামুনুর রশিদ ও সেলিনা আক্তার বানু। মালিকপক্ষে শেখ কবির হোসেন ছাড়াও ছিলেন সরকারি দলের সাংসদ নজরুল ইসলাম, কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ।
সংসদ প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম