স্থানীয়ভাবে হাইড্রোলিক হর্নের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যেসব কারাখানা হাইড্রোলিক হর্ন তৈরির সঙ্গে জড়িত সেগুলো বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের আশপাশে হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন রাজধানীর আবাসিক ও ভিআইপি এলাকায় রাত দশটার পরে সব ধরনের হর্ন বাজানো এবং বিশ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানোয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এসব বিষয় পালনে করণীয় সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপি তাদের অধীনস্থদের নির্দেশনা দেবেন। এছাড়াও এসব আদেশ পালনে কাকরাইল-মগবাজার হয়ে ময়মনসিংহ রোড এবং শাহবাগ-সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে গাবতলী রোডে তদারকি টিম রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা মহানগরে চলাচলকারী যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ এ রিট দায়ের করেন।
ওই রিটে বলা হয়, মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী যানবাহনে এমন কোনও যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না যা শব্দ দূষণের সৃষ্টি করে। কিন্তু আইন ভঙ্গ করে বিভিন্ন যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা হচ্ছে।
উক্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট আগের রিটের শুনানি শেষে রুল জারিসহ রাজধানীতে চলাচলকারী সব যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ, ২৭ আগস্টের পর কোনো গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন থাকলে সে গাড়ি জব্দ এবং হাইড্রোলিক হর্নের আমদানি বন্ধ করে বাজারে এখনও যেসব হর্ন রয়েছে তা জব্দের নির্দেশ দেন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রুলে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং সারা দেশে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চান হাইকোর্ট।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজিপি, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি, ডিএমপি’র কমিশনার, ট্রাফিকের যুগ্ম কমিশনার, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, ঢাকার ট্রাফিকের চার ডিসিসহ ২০ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
দু’সপ্তাহের মধ্যে হাইড্রোলিক হর্নের আমদানি-ব্যবহার নিষিদ্ধের এ আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদনও দিতে বলেছিলেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) সংশ্লিষ্টরা।
পরবর্তীতে গত ৫ নভেম্বর ঢাকায় হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের পর সারাদেশে যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ বিধি ১৯৯৭’ ও ‘শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধি ২০০৬’ অনুসারে নির্ধারিত মাত্রার বেশি শব্দ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ এবং শব্দ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নজরদারি (সারভিল্যান্স) টিম গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম