ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় দেওয়ার কারনেই সরকার সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে জুডিশিয়াল ক্যু করে বিদায় করেছে বলে অভিযোগ করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। আর এখন রিভিউ দায়ের করে পুরো রায় বাতিলের চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করা হয় বারের পক্ষ থেকে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বারের নেতারা। রিভিউ দায়েরের পর অ্যাটর্নি জেনারেলের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বারের পক্ষ থেকে।
লিখিত বক্তব্যে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার নিজেদের স্বার্থে বিচার বিভাগকে পরিচালিত করতে চান। তারা যেভাবে চান সেভাবেই আদালতকে রায় দিতে হবে। তা না হলে বিচারপতি সিনহার মত তাদেরকেও একই পরিণতি বরণ করতে হবে। এর আগেও বিচারক মোতাহার হোসেন রায় দিয়ে দেশে থাকতে পারেননি। এভাবেই তারা অন্যান্য বিচারপতিদের তারা ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। এ কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকার খালেদা জিয়ার মামলার রায়কেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে মনে করেন তিনি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, অতীতে বহুবার বে-আইনী সংশোধনীর বিরুদ্ধে অনেক সিদ্ধান্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালত দিয়েছেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এবং আদেশের বিরুদ্ধে সরকার এইভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে কোনো রিভিউ আবেদন করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। একটি রায়ের মধ্যে সরকারের মতে দু-একটি পর্যবেক্ষণ অপ্রসাঙ্গিক থাকতেই পারে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের জন্য ৯৪টি যুক্তি দেখালেন। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে এই সরকার বিচার বিভাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমেই সুকৌশলে নিতে চাচ্ছে।
সমিতির সভাপতি বলেন, আপিল বিভাগের রায় প্রদানকারী সাতজন বিচারপতির মধ্যে পাচঁজন কর্মরত আছেন। তাই বিচারপতিগণ তাদের পূর্ববর্তী রায়ের আলোকে এই রিভিউ পিটিশনটি বাতিল করবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। আর তা না হলে ভবিষ্যতে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার জন্য কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও জানান বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-সম্পাদক শামীমা সুলতানা দীপ্তি, সাবেক সহ-সভাপতি এবিএম অলিউর রহমান খান, আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মেহেদী, কামরুল ইসলাম সজল, আবেদ রাজা, খোরশেদ আলম, সগীর হোসেন লিয়ন, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, এএইচ এম কামরুজ্জামান মামুন প্রমুখ।