সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অধীনে থাকা দুই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান দল তাঁদের ব্যাংক হিসাবে জমা প্রায় সোয়া চার কোটি টাকা আয়ের উৎস ও ব্যয়ের সুষ্ঠু হিসাব খুঁজে পায়নি। ব্যাংক হিসাব জব্দ করে ওই দুই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
ওই দুই দলিল লেখকের নাম আলমগীর হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। আলমগীর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি উল্লাপাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান আলী সরকারের ছেলে। আলমগীরের সহযোগী হলেন আনোয়ার। তিনি একজন সহকারী দলিল লেখক।
দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল ২১ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া সাবরেজিস্ট্রি অফিস পরিদর্শন ও তদন্ত করে। ওই দিন অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর সহযোগী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার উল্লাপাড়া থানায় এই দুই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। তাঁদের সব ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আলমগীর হোসেনের ব্যাংক হিসাবে থাকা ২ কোটি ১৬ লাখ ৭৭ হাজার ১৭১ টাকা ৪২ পয়সা সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে অর্জিত। এর মধ্যে ১ কোটি ৮২ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৩ টাকা ৩২ পয়সা উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেনের একটি সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬১৬ টাকা জমা ছিল। তা থেকে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮৪২ টাকা তুলে নিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া আনোয়ার হোসেনের ৫০ লাখ টাকার আরও একটি এফডিআর ছিল। এসব অর্থ আয়ের কোনো উৎস বা ব্যয়ের কোনো সুষ্ঠু হিসাব দিতে পারেননি আনোয়ার হোসেন।
উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান কউশিক আহমেদ বলেন, আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।