হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলের ৬১ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম চলতে আর কোনো বাধা রইল না।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, আবদুল বাসেত মজুমদার, আবদুল মতিন খসরু ও এ এম আমিন উদ্দিন।
আদেশের পর খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ স্থগিত করে দিয়েছেন। তবে এরই সঙ্গে হাইকোর্ট এ বিষয়ে যে রুল জারি করেছিল, সেটিও হাইকোর্টে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় বিচারিক আদালতে এ মামলার বিচার কার্যক্রম চলতে আর কোনো বাধা নেই।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সুনামগঞ্জের বোরো ফসলহানির পর গত ২ জুলাই বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ। মামলায় পাউবোর ১৫ জন ছাড়াও সুনামগঞ্জের ১৩ জন, ঢাকার ৯ জন, সিলেটের ৬ জন, কুমিল্লার ৩ জন, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সাতক্ষীরার ২ জন করে এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, পটুয়াখালী, খুলনা, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার একজন করে ঠিকাদারকে আসামি করা হয়।
পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আসামি বাচ্চু মিয়া। ১২ ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানি নিয়ে মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিতের পাশাপাশি রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। এরই ধারবাহিকতায় মঙ্গলবার হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের আদেশ দেন আপিল বিভাগ।