আইনের ফাঁকফোকর আর কৌশলে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। মুক্ত জীবনে এসে অনেকেই পুনরায় জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত হচ্ছে। আর একের পর এক হত্যাকান্ড ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মনেও হতাশা ও উদ্বেগের জন্ম হয়েছে।
সম্প্রতি ১৮ দুর্ধর্ষ জঙ্গি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তি পাওয়া এসব জঙ্গির অনেকেই এখন উধাও। যদিও তাদের সবার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা রয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া এসব জঙ্গিদের ধরতে মাঠে নেমেছে র্যাবসহ গোয়েন্দারা।
জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিদের মধ্যে রয়েছেন জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য মোঃ মোস্তাক ওরফে মোস্ত ওরফে শামীম (২৫), মোঃ শরীফুল ইসলাম ওরফে শাহীন (২১), মোঃ আক্তারুজ্জামান ওরফে মারুফ (৩২), হাফেজ মাওলানা ওমর ফারুক (৩২), মোঃ সেলিম হাওলাদার (৩২), মোঃ কাইয়ুম হাওলাদার মিঠু ওরফে সাইফুল (২৪), মোঃ মামুনুর রশিদ ওরফে শায়েখ মামুন (৩৪), মোঃ জামাল উদ্দিন ওরফে রাসেল জিহাদী (৩৫), মোঃ আবুল কাশেম মুন্সী ওরফে কাশেম, মোঃ তুষার হাবিব ওরফে আইয়ুব (২৬), ফয়সাল আহম্মেদ (৪৮)। বাকিদের মধ্যে রয়েছেন আবু বকর সিদ্দিকি, আবু রায়হান ওরফে রবিন ওরফে হিমেল, মোঃ জাবির হাওলাদার ওরফে জাবির, খন্দকার আবু নাইম ওরফে নাইম জিহাদী, ইমরান আহমেদ (৩৭), মোঃ ফারুক হোসেন ওরফে ওম ফারুক ও মোঃ নবীন হোসেন রাব্বী।
একের পর এক জঙ্গি মুক্তি পেয়ে যাওয়ার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গি তদন্তকারীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, জঙ্গিরা সহজে কারাগার থেকে মুক্তি পেলে তাদের মনোবল বেড়ে যায়। জঙ্গি কর্মকান্ডে আরো বেশি তৎপর হয়ে ওঠে।
জঙ্গি দমনে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রসংশা রয়েছে। জীবন বাজি রেখে একের পর এক অভিযান চালিয়ে দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের বুকেও রয়েছে তাদের প্রসংশা। আর এ কাজ করতে গিয়ে তাদের জীবনও দিতে হয়। ইতোপূর্বে সিলেটে জঙ্গি হামলায় র্যাবের ইন্টেলিজেন্স এর পরিচালক লেঃ কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও ডিবির ইন্সপেক্টর মনিরুলসহ তিনজন এবং গুলশানের হলি আর্টিজান হামলায় সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল এবং বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় অভিযান চালাতে গিয়ে র্যাব পুলিশের আরো অনেকে হতাহত হয়েছেন। জঙ্গি দমনে যেখানে সারা বিশ্ব তৎপর সেখানে সহজে জঙ্গি আদালত থেকে মুক্তি পেয়ে যাওয়া খুবই হতাশাজনক বলে মনে করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাব বলছে, একজন জঙ্গিকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন কোন ইউনিটকে কয়েক মাস ধরে কাজ করতে হয়। সোর্স নিয়োগ, রেকি করা, নজরদারি ও অভিযান পরিচালনার পর একজন বা একাধিক জঙ্গি ধরা পড়ে। অথচ ওইসব জঙ্গিরা সহজেই জামিনে মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশ থেকে জঙ্গি নির্মূল করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আগের মতো পালিয়ে যাবে, নয়তো আত্মগোপনে থেকে নতুন করে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক।
এ ব্যাপরে র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ বলেন, ১৮ জঙ্গি গ্রেফতারে তাদের ইউনিট কাজ করছে যাতে তারা জঙ্গি তৎপরতা চালাতে না পারে।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম