একটি মামলার চার্জ শুনানীকালে দেখা গেল এক মা বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার বৃদ্ধ স্বামীকে কোদাল ও লোহার রড দিয়ে গুরুতর আহত করার জন্য। শুনানী থামিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ করলেন পরবর্তী তারিখে ঐ বৃদ্ধা বাবা ও মাকে হাজির করার জন্য। পরের তারিখে ঐ মা ( বাদী), বাবা (সাক্ষী) ও ছেলে (আসামি) আদালতে হাজির হলে দেখা গেল বৃদ্ধ পঙ্গু বাবা স্ক্রাচে ভর দিয়ে দাড়িয়ে, সহজ সরল বৃদ্ধা মা অসহায়ের মত সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাড়িয়ে, মধ্যবয়সী যুবক ছেলে আসামীর কাঠগড়ায় দাড়িয়ে। পুলিশের রিপোর্টে অভিযোগ গুরুতর! শুনানী শুরু হলে ম্যাজিস্ট্রেট মা-বাবাকে ঘটনা কী অর্থাৎ মা হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ কেন ও বিচারপ্রত্যাশী কি-না জিজ্ঞাসা করতেই বাবা-মা বলে উঠলেন তারা তাদের একমাত্র ছেলের বিচার চাননা। কারণ ছেলে তখন নেশাগ্রস্ত ছিল, ছেলেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তাই মামলা চালাবেন না! কোর্ট ভরা নীরবতা!
রাষ্ট্রপক্ষের উকিল সাহেব বললেন, ছেলে বাবার পা জাপ্টে ধরে এবং পরে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চাইল।
ম্যাজিস্ট্রেট ছেলেকে উদ্দেশ্য করে আবেগভরা কন্ঠে বল্লেন- এরই নাম বাবা মা এর সন্তানের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও ক্ষমা, তোমার বাবা মা ক্ষমা না করলে আগামি ৫ বছর কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে এবং বিচারে হতো সাজা।
চেহারা দেখে বিচারক বুঝলেন- ছেলে অনুতপ্ত ও লজ্জিত। তারপর একটি মানবিক বিচারিক সমাধান। কিছু ক্ষমা শাস্তি প্রদানের চাইতে বড় শাসন ও মহৎ শিক্ষা!
কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহ: মাসুদুজ্জামানের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত