কাশ্মিরে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার আট বছর বয়সী শিশু আসিফা বানুর জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেমে আইনজীবী দীপিকা এস রাজাওয়াত নিজেই ‘ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হওয়া’ হুমকিতে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। তার জীবননাশের শঙ্কার কথা জানিয়ে রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের কাছে সুরক্ষা চাইবেন তিনি।
এ বছরের জানুয়ারিতে কাঠুয়ার উপত্যকায় ঘোড়া চড়ানোর সময় অপহরণ করা হয় আসিফাকে। আদালতে দায়ের করা মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আসিফা নামের ওই শিশুকে অপহরণের জন্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও দেবীস্থান মন্দিদের হেফাজতকারী সানজি রাম তার ভাগ্নে ও একজন পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ বাস্তবায়নের পর সাত দিন ধরে মন্দিরে আটকে রেখে একদল হিন্দু পুরুষ ধর্ষণ করে আসিফাকে।
পরে মাথায় পাথর মেরে ও গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। আসিফাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটজনকে অভিযুক্ত করেছে ভারতের আদালত। মধ্য জানুয়ারির ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার দিন অভিযোগপত্র জনসম্মুখে আনা হয়। জানুয়ারিতে এ নিয়ে তেমন উত্তেজনা না হলেও এ ঘটনায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর সোচ্চার হয়ে ওঠে সারা ভারত।
আসিফার পরিবারের হয়ে মামলা লড়ছেন আইনজীবী দীপিকা এস রাজাওয়াত। রোববার এনডিটিভিকে তিনি জানান, তাকেও হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। দীপিকা বলেন, আমি জানি না কতদিন জীবিত থাকতে পারব। আমি ধর্ষণের শিকার হতে পারি…আমার সম্মান ক্ষুণ্ণ করা হতে পারে, আমার ক্ষতি করা হতে পারে। রোববার আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘আমরা তোমাকে ক্ষমা করব না’। আমি সুপ্রিম কোর্টকে বলব যে আমি হুমকিতে আছি।”
এদিকে আজ সোমবার কাঠুয়ার দায়রা জজ আদালতে আসিফাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিচার শুরু হয়েছে। তবে আসিফার পরিবারও নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছে। এরমধ্যে মালার বিচার কার্যক্রম কাঠুয়া থেকে চণ্ডিগড়ে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন আসিফার বাবা। এ ব্যাপারে আইনজীবী দীপিকা বলেন, জম্মুর পরিস্থিতি, কাঠুয়ার আইনজীবীদের বিরোধিতা এবং অভিযোগপত্র দায়ের করতে বাধা দেওয়া দেখে, আমরা শঙ্কিত যে বিচারিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ হবে না। এ মামলা অন্য কোনও রাজ্যের আদালতে স্থানান্তরের জন্য আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
আসিফা হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের পর মাহবুবা মুফতি সরকার থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন ওই দুই বিজেপি নেতা। মোদি বলেছিলেন, আমি দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই যে কোনও দোষীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের মেয়েরা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবে।