প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ। তাঁরা বলছেন এই ধারাগুলো বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থী। এ জন্য তাঁরা এ ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে বৈঠক করে সম্পাদক পরিষদ এ উদ্বেগ তুলে ধরে।
বৈঠক শেষ করে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সম্পাদক পরিষদ যে আপত্তিগুলো তুলে ধরেছে সেগুলো অনেকাংশে যৌক্তিক। তবে আইনটি এখন সংসদীয় কমিটিতে আছে। কমিটির সভা হবে ২২ এপ্রিল। সেখানে তিনি প্রস্তাব করবেন সম্পাদক পরিষদকে যেন আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। এরপর তারিখ ঠিক করে আমন্ত্রণ গ্রহণের পর সম্পাদক পরিষদ যেন তাদের আপত্তি বা উদ্বেগের বিষয়গুলো লিখিত আকারে দেয়।
মন্ত্রী আশা করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য। এটা ফ্রিডম অব প্রেস বা ফ্রিডম অব স্পিচ বন্ধ করার জন্য নয়। সেই ক্ষেত্রে আইনে যদি কোনো ত্রুটি বা দুর্বলতা থাকে তাহলে সেগুলো সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করা হবে। তারা আশা করছেন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্পাদক পরিষদ যে উদ্বেগগুলো তুলে ধরেছে তা দূর করতে পারবেন।
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের উদ্বেগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ , ২৫ , ২৮ , ৩১ , ৩২ ও ৪৩ নম্বর ধারা নিয়ে। তাঁরা মনে করেন এ ধারাগুলো বাক স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থী। তিনি বলেন ‘স্বাধীন সাংবাদিকতা নিয়ে যেটা আমরা বাংলাদেশে গর্ববোধ করি, সেটা গভীরভাবে ব্যাহত করবে। এসব কথা ওঁনাদের (সরকারের মন্ত্রী) বলেছি। ওঁনারাও সানন্দে গ্রহণ করেছেন।’
মাহ্ফুজ আনাম বলেন, তাঁরা আশা করেন আইনটি সত্যিকার অর্থে সাইবার অপরাধ প্রতিহত করবে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা কোনো রকম খর্ব হবে না।
আলোচনায় সম্পাদকদের মধ্যে আরও ছিলেন নিউজটুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নয়াদিগন্তের সম্পাদক মহিউদ্দিন আলমগীর, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নইম নিজাম, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবীর, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন এবং বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।