তারেক রহমান আপাতত বাংলাদেশের নাগরিক নন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে নাগরিকত্বের সঙ্গে পাসপোর্টের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে, দেশের বাইরে গেলে নিজ দেশের পাসপোর্টই নাগরিকত্বের মূল দলিল হিসেবে যেহেতু বিবেচিত হয়; সেহেতু ব্রিটেনে আশ্রয়রত দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান ব্রিটেন সরকারের কাছে তার নিজ দেশের পাসপোর্ট সারেন্ডার করে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম (রাজনৈতিক আশ্রয়) চেয়েছেন। ব্রিটেন সরকার তাকে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম দিয়েছে কিনা, সেটি আমি জানি না। তবে, যেহেতু তিনি পাসপোর্ট সারেন্ডার করেছেন, সেহেতু তিনি আর এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নাগরিক নন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান যদি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নাগরিক হতে চান, তাহলে তিনি তা পারবেন বলেও মনে করেন আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি যতটুকু জেনেছেন, তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের জন্য তাঁর পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। তার মানে তারেক বলছেন, তিনি আপাতত বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে চান না। এখন তারেকের অবস্থান (স্ট্যাটাস) হচ্ছে, তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। তার মানে তিনি এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ডিনাই (অস্বীকার) করেছেন।
তারেক রহমানকে কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে, সে বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের কাছে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
আনিসুল হক বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডে অপরাধ করেছেন। অপরাধ সংঘটনের সময় তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি নেই জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এই চুক্তি করতে বাধা নেই। চুক্তি করার জন্য আলোচনা চলছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক না হলেও জাতিসংঘের ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাক্ট’র আওতায় ব্রিটেনের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তি সম্পাদন করে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের দেওয়া রায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যদিও, এই মুহূর্তে ব্রিটেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি করা নেই। তবে, এই চুক্তি করতে কোনও বাধাও নেই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাসরুরকে গ্রেফতার এবং ছেড়ে দেওয়ার যে অভিজ্ঞতা, তা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। অন্তত আমি শিখেছি এবং আমি সংশ্লিষ্টদের বলেছি—যদি আগামীতে পুলিশ এমন ধরনের নালিশ পায়, পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অনুসন্ধান করে অভিযোগ সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে যেন ব্যবস্থা নেয়। এমন ভুল সরকারের কাম্য নয়। এমন ভুল যদি ভবিষ্যতে হয়, তাহলে যার দ্বারা হবে; তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এছাড়া সকলকে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসরণ করার অনুরোধ করেছেন আইনমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক উপস্থিত ছিলেন।