সালমান শাহকে ঘিরে ওয়েব সিরিজ, প্রচার বন্ধে আইনি নোটিশ
প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ

সালমান শাহর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক-ডোমকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

 

চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের শেষ হচ্ছে না। এবার সালমান শাহর মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও ডোমকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলেন আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিাবর (২৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস এ আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০ আগস্ট নতুন করে দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আদালতের এ অনুমতির ফলে হায়দার আলী প্লাবো মেডিকেলের তৎকালীন চিকিৎসক (সালমানের ময়নাতদন্তকারী) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডোম রমেশ চন্দ্রকে এখন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তদন্ত সংস্থা পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত সিকদার প্রতিবেদন দাখিলেরে জন্য এ দিন ধার্য করেন। এর আগে ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর পিবিআইকে পুনঃতদন্তের জন্য নির্দেশ দেন আদালত।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে- অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন।

নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আদালত নারাজি আবেদনটি মঞ্জুর করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে তদন্তভার প্রদান করেন। মামলাটিতে র্যাবকে তদন্ত দেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন।