সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। পাশাপাশি অবসরের বয়সসীমা ৬৫ করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
আজ বুধবার (২৭ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খোরশেদ আরা হক ও মো. আব্দুল্লাহ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। সর্বসম্মতভাবে এ সুপারিশ গ্রহণের পাশাপাশি অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কমিটি সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে বেশকিছু যুক্তিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো তাদের জনগণকে মানবসম্পদে রূপান্তরের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমারেখা নির্দিষ্ট করেনি। প্রতিবেশী দেশগুলোতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০, শ্রীলংকায় ৪৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫, ইতালিতে ৩৫, ফ্রান্সে ৪০ এবং অনেক দেশে অবসরের আগের দিন পর্যন্ত। আর বাংলাদেশে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে আরও দুই বছর বেশি। কিন্তু প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর হয়নি।
প্রসঙ্গত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে সাধারণ ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন করে আসছে। ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনেও বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। আর সরকার ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরাও ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরাবরই এর বিপক্ষে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। এ নিয়ে সংসদেও তিনি বক্তব্য দিয়েছেন।
বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন দশটি প্রকল্পের বিপরীতে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১৬৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। গত ১৮ জুন পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৬৩ ভাগ।
আরও জানানো হয়, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতরের বিশেষ অনুরোধে চারজন সচিব, ৩৬ অতিরিক্ত সচিব, ১১১ যুগ্ম সচিব এবং ২০০ উপ-সচিব তিন বছরের অধিককাল ধরে রয়েছেন।